দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। তার আগে জোরকদমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মহিমা প্রচার করতে নেমে পড়েছে বিজেপি। তৈরি হচ্ছে মোদীর জীবনী নিয়ে সিনেমাও। আর তা করতে গিয়েই গোধরা ঘটনার পুনর্নির্মাণে রেলের কামরাই জ্বালিয়ে দেওয়া হল! ভোটের আগে ওই সংবেদনশীল বিষয়টি সামনে আসতেই দিনভর বিতর্কের মুখে পড়েন ওই সিনেমার নির্মাতা, ভারতীয় রেল-সহ মোদী সরকার।
অবস্থা বেগতিক দেখেই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টায় নেমে পড়ে রেল। বিকেলে রেলের তরফে গোটা ঘটনাটিকেই অস্বীকার করে জানান হয়, এই অভিযোগ নাকি একেবারেই ভিত্তিহীন। শুটিংয়ের জন্য কেবল একটি কামরাই সিনেমা প্রযোজকদের ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। তবে দাবি না করে রেল আশা করছে, যে ভাবে কামরাটি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের দিয়েছিল, সে ভাবেই ফেরত পাবে পশ্চিম রেল। যাতে স্পষ্ট আভাস মিলছে যে, রেলেরও নিশ্চিত নয়, তারা আদৌ কামরাটা পূর্বের অবস্থায় ফেরত পাবে কিনা।
প্রসঙ্গত, সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য মোদীর জীবনীমূলক একটি ছবি বানাচ্ছেন উমেশ শুক্লা। ‘সংঘর্ষ’ নামের ওই ছবির প্রয়োজনেই গোধরা কান্ড দেখাতে হয়। ২০০২ সালে গোধরা স্টেশনে সবরমতী এক্সপ্রেসের এস-৬ কামরায় আগুন ধরে গেলে প্রায় ৫৯ জন অযোধ্যা ফেরত করসেবক মারা যান। ওই ঘটনার পরেই গোটা গুজরাট জুড়ে শুরু হয়েছিল ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ। সে সময়ে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মোদী স্বয়ং।
ছবিতে গোধরার ঘটনাটিকে হুবহু ফুটিয়ে তুলতে পশ্চিম রেলের কাছ থেকে একটি পুরনো কামরা চার দিনের জন্য ভাড়া নিয়েছিলেন পরিচালক। অভিযোগ, শুটিংয়ের সময়ে ওই কামরাটিকে জ্বালানো হয়েছে! এর পরেই টনক নড়ে রেল বোর্ডের। দ্রুত এ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য রেল ভবন থেকে নির্দেশ যায় পশ্চিম রেলের কাছে। সোমবার বিকালে পশ্চিম রেলওয়ের মুখপাত্র ক্ষেমরাজ মীনা বিবৃতি দিয়ে জানান, প্রতাপনগর স্টেশনের কাছে শুটিং চলছিল। কামরাটিকে জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। কিন্তু এই বিবৃতির পরেও আশ্বস্ত হতে পারছে না বিরোধীরা। যেমন নিশ্চিন্ত হতে পারছে না খোদ রেলই।