সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতোই চিটফান্ড তদন্ত হাতে নিয়েছে সিবিআই। শোনা যাচ্ছে, এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় এবার বাম জমানার প্রসঙ্গও তুলতে পারে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কারণ সিবিআইয়ের অভিযোগ, চিটফান্ডের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সতর্ক করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলে বাম সরকারকেও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের তরফে গোয়েন্দা তথ্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার ভিত্তিতে তৎকালীন বুদ্ধদেব সরকার আদৌ কোনও পদক্ষেপ করেছিল কিনা তা এখনও জানা যায়নি। পুরোটাই ধোঁয়াশা।
সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, চিটফান্ডের মাধ্যমে বাংলার প্রচুর মানুষের কাছ থেকে বহু কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করা হচ্ছে, এই মর্মে ২০০৯ সালেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রককে রিপোর্ট দিয়েছিল। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ওই রিপোর্ট ২০০৯ সালের ৪ নভেম্বর পাঠিয়ে দিয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যসচিবকে। চিঠিতে সারদা চিটফান্ড সংস্থার নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, লোক ঠকানোই ওই সংস্থার উদ্দেশ্য হতে পারে। বিষয়টা খতিয়ে দেখুক রাজ্য। তখন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকার ক্ষমতায় ছিল বাংলায়।
কিন্তু, চিটফান্ড সংস্থাগুলির সঙ্গে বাম সরকারের আঁতাতের কারণেই হয়ত তাদের বিরুদ্ধে কোনও রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে সিবিআইয়ের ধারণা। তাদের বক্তব্য, ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বাংলায় সক্রিয় ছিল সারদা চিটফান্ড সংস্থা। ফলে বাম আমলেই রাজ্যে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে ওই চিটফান্ড সংস্থাগুলি। এবং খোদ বুদ্ধদেব সরকারের প্রশ্রয়েই যত বাড়বাড়ন্ত তাদের। তাই কোনও ভাবেই দায় এড়াতে পারেন না তৎকালীন বাম সরকারের মন্ত্রী-আমলারা।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই বলে আসছেন, চিটফান্ডের জন্ম হয়েছিল বাম জমানাতেই। তিনি ক্ষমতায় এসে বরং সেগুলি বন্ধ করার জন্য কড়া ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। এবং তাতে তিনি অনেকটাই সফলও হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী যে ভুল কিছু বলেননি, সিবিআইয়ের বক্তব্যেই তা পরিষ্কার। ফলে চিটফান্ড কান্ডে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে বামেরা এবার ভোটের মুখে প্রকাশ্যেই ‘রাম’নাম করে কিনা সেটাই দেখার।