পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার উদ্যোগে এবার বারাসাতে বিদ্যুৎ পরিষেবা সংক্রান্ত যাবতীয় কেবল লাইন মাটির নীচ দিয়ে নিয়ে যাবার এক বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সল্টলেক-নিউটাউনের ধাঁচেই বারাসাতে হবে এই প্রকল্প। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদর শহর বারাসতে প্রশাসনিক কাজের গুরুত্ব ও জনবসতি বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে এক নাগাড়ে উন্নতমানের বিদ্যুৎ পরিষেবার উপরে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, মাটির নীচ দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের কেব্ল লাইন নিয়ে গেলে বারাসত পুর-এলাকায় ও তার আশপাশে কিছু অঞ্চলে পরিষেবার মান বদলে যাবে উপকৃত হবে অসংখ্য মানুষ। এই খাতে প্রায় ২৫০-৩০০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। এই বিদ্যুৎ পরিষেবার পরিকাঠামোটি গড়ে তোলার জন্য বিশেষ একটি তহবিল থেকে বণ্টন সংস্থাকে আর্থিক সাহায্য করবে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছে আগ্রহপত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে।
আগামী অর্থবর্ষেই (২০১৯-’২০) বারাসত পুর এলাকায় এই প্রকল্পের কাজ শুরু হতে চলেছে।অনুমান করা হচ্ছে বছর দুয়েকের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। নবান্নের খবর, ধাপে ধাপে রাজ্যের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা সদরেই মাটির উপরে ওভারহেড লাইন বাতিল করে বিদ্যুৎ পরিষেবার ভূগর্ভস্থ লাইন চালু হবে। বিদ্যুৎ দফতরের, ‘গ্রিন সিটি মিশন’ প্রকল্প নাম দিয়ে বারাসত ছাড়াও আরও তিনটি শহরকে এই কাজের জন্য বাছা হয়েছে। রাজ্য সরকারই এই প্রকল্পের ব্যয়ভার গ্রহণ করবে।
বিদ্যুৎ শিল্প মহলের বক্তব্য, পরিষেবার ক্ষেত্রে আগাম পরিকল্পনা করে মাটির নীচ দিয়ে কেব্ল লাইন নিয়ে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ জনিত ক্ষয়ক্ষতি কম হয়। হুকিং-এর ভয় নেই। ঝড় বৃষ্টির কারণে লোডশেডিং কম হবে। উন্নত দেশের শহরগুলিতে এবং ভারতেও বিভিন্ন জায়গায় মাটির নীচ দিয়েই কেব্ল লাইন টানার নজির রয়েছে বলে শিল্প মহলের দাবি।
বণ্টন সংস্থার এক কর্তার দাবি, এমন ভাবে মাটির নীচে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রকল্পের নকশা তৈরি করা হবে যাতে পুরএলাকার পানীয় জল, টেলিফোন, নিকাশি বা অন্য কোনও পরিষেবার লাইন কেব্লের কাছাকাছি থেকে সমস্যা তৈরি করতে না-পারে। কোথাও লাইন বসাতে সমস্যা থাকলে বা ভবিষ্যতে রাস্তা চওড়া করা হতে পারে এমন সম্ভাবনা থাকলে ১২-১৪ ফুট মাটির নীচে পাইপের ভিতর দিয়ে কেবল তার নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই কর্তা জানান, “আগ্রহী সংস্থা বাছাইয়ের কাজ চূড়ান্ত হয়ে গেলে কোন অঞ্চলে কী ভাবে, মাটির কত গভীরে, কী সুরক্ষা নিয়ে লাইন বসবে সে বিষয়ে বিস্তারিত সমীক্ষার কাজ হবে”।