পুলওয়ামায় ‘ঘৃণ্য ও কাপুরুষোচিত’ হামলার জন্য জৈশ-ই-মহম্মদের নাম উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা করেছে রাষ্ট্রসংঘ। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এমন চাপের মুখে পড়ে শুক্রবারই পাকিস্তানের তরফে দাবি করা হয়েছিল ভাওয়ালপুরে জৈশের সদর দফতরের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে পাঞ্জাব প্রদেশের প্রশাসন। কাজকর্ম চালাতে সেখানে একজন প্রশাসকও নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু ফের নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এল পাকিস্তান। পাক সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হল, ওই ভবন এবং তার আশপাশের এলাকার সঙ্গে সন্ত্রাসের কোনও সম্পর্ক নেই। এমনকি জৈশের সদর দফতর দখল নেওয়ার কথা অস্বীকার করে তারা।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। সেদিন বৈঠকে বসে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। তার পরের দিন সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে ইমরান মন্ত্রিসভার তথ্যমন্ত্রী ফওয়াদ চৌধুরি জানিয়েছিলেন যে ভাওয়ালপুরের মাদ্রাসাতুল সাবীর এবং জামা-ই-মসজিদ সুভানআল্লার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। সংস্থাকে দেওয়া প্রতিক্রিয়া নয়, বিষয়টি সরকারি ভাবেও জানিয়ে দেওয়া হয়। তথ্য দফতর বিবৃতি দিয়ে জানায়, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বে হওয়া ওই বৈঠকের পরই জৈশ-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। ভাওয়ালপুরের ওই বাড়িতে ৭০ জন শিক্ষক এবং ৬০০ জন ছাত্র আছে। তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করছে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ।
কিন্তু এই বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অবস্থান বদলে ফেলে ইসলামাবাদ। নিজের অবস্থান থেকে সরে যায় ইসলামাবাদ। ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে নতুন বিবৃতিতে তথ্যমন্ত্রী জানান, দখল নেওয়া চত্ত্বরটি মাদ্রাসা।ওখানে কোনও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ হয় না। ভারত সেটিকে জৈশের সদর দফতর হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা করছে।
এমনকি নিজেদের দাবিকে সত্যি প্রমাণ করতে বেশ কয়েকজন স্থানীয় সাংবাদিককে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে সেই দলে থাকা এক সাংবাদিক নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্র এবং শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আমরা তাঁদের কাছে জৈশ-ই-মহম্মদ এবং তাদের কাজকর্ম নিয়ে জানতে চাই। কিন্তু সকলেই বিষয়টি এড়িয়ে যান। ভাব গতিক দেখে মনে হচ্ছিল আমাদের যাওয়ার আগে তাদের শিখিয়ে-পড়িয়ে রাখা হয়েছে।’ অর্থাৎ রীতিমতো পরিকল্পনা করেই যে তড়িঘড়ি নিজেদের অবস্থান বদল করেছে ইসলামাবাদ, তা বলাই বাহুল্য।