অসহিষ্ণুতা কুসংস্কার সব মিলিয়ে আমরা এগিয়ে যাবার থেকে বরং একটু একটু করে পিছিয়ে যাচ্ছি। তার প্রমাণ মিলল পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে। মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেছে, সেই অপরাধে এক যুবককে পিটিয়ে, পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠল প্রেমিকার পরিবারের বিরুদ্ধে।
শনিবার রাতে পাড়ার মধ্যে ঝোপের ধারে ছেলেটিকে আগুনে পুড়তে দেখে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় ভুপতিনগর থানায়। পুলিশ আসার আগেই অবশ্য প্রায় পুরো দেহই ভস্মীভূত হয়েছে তাঁর। নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটেছে ভুপতিনগর থানার খানজাদাপুর গ্রামে।
ঘটনার পরেই ওই তরুণী সহ তাঁর পরিবারের ছ’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের অবশ্য বক্তব্য, রঞ্জিত নামে ওই যুবক তাঁদের বাড়ির মেয়েকে বিরক্ত করতো। গতকাল রাতে মেয়ে সম্পর্ক রাখবেন না বলে জানাতেই ওই যুবক গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
এই বক্তব্য অবশ্য মানতে নারাজ রঞ্জিতের পরিবার ও পড়শিরা। রঞ্জিতের দুই দাদাই সেনা বাহিনীর জওয়ান। শুধুমাত্র প্রেম করায় ভাইয়ের এমন পরিণতি মানতে নারাজ তাঁরা। পুলিশের কাছে ওই তরুণীর পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। ভূপতিনগর থানার ওসি তরুণ সাধুখাঁ বলেন, “আমাদের প্রাথমিক সন্দেহ ওই যুবককে খুনই করা হয়েছে। গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে।”
ভুপতিনগরের দক্ষিণ বায়েনদা গ্রামে বাড়ি রঞ্জিত মণ্ডলের (২১)। কিন্তু তাঁর মা মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি খানজাদাপুর গ্রামে মামার বাড়িতে থাকতেন তিনি। এখানেই তাঁর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এই গ্রামেরই ১৯ বছরের এক তরুণীর। ওই তরুণী স্থানীয় কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। দিল্লিতে সোনার কাজ করতেন রঞ্জিত। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, দিন চারেক আগে দিল্লী থেকে মামা বাড়িতে ফেরেন রঞ্জিত।
শুক্রবার রাতে ওই তরুণী তাঁকে ফোন করে দেখা করতে বলে। সবার অগোচরে রঞ্জিত বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যান। সেই সময় তাঁদের দু’জনকে ধরে ফেলে মেয়েটির পরিবার। শুরু হয় মার। ধীরে ধীরে ওই যুবক নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাঁকে টেনে পাশের ঝোপের কাছে নিয়ে গিয়ে গায়ে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় এমনটাই অভিযোগ।