শিক্ষাপদ্ধতিকে আরও সহজ করে তুলতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছেন মোদী সরকার। দেশের প্রায় ৭ লক্ষ স্কুল ও ২ লক্ষ কলেজে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকেই ডিজিটাল মাধ্যমে পড়াশোনা শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। কিন্তু এই প্রকল্পের টাকা কোথা থেকে আসবে সে বিষয়ে কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি তিনি। এই প্রকল্পের মোট খরচের ৪০ শতাংশ দায়ভার রাজ্যগুলিকে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। কিন্তু পাঞ্জাবের মতো ঋণগ্রস্ত এবং বাংলা মতো কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হওয়া রাজ্যগুলি কেন্দ্রের ওই প্রকল্পে টাকা দিতে রাজি হবে কি না, তা নিয়ে কোনও জবাব দেননি জাভড়েকর।
জানা গেছে, ডিজিটাল বোর্ড লাগাতে শ্রেণীকক্ষ-পিছু গড়ে এক লক্ষ টাকা খরচ হবে। পুরো প্রকল্প রূপায়িত করতে সাত থেকে দশ হাজার কোটি টাকা লাগবে। কিন্তু কোথা থেকে ওই টাকা আসবে, অন্তর্বর্তী বাজেটে সে বিষয়ে কিছুই বলা নেই। জাভেড়করের বক্তব্য, ‘উচ্চশিক্ষায় আইসিটি (ইনফর্মেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি) খাতে ফি-বছর পাঁচশো থেকে সাতশো কোটি টাকা বরাদ্দ থাকে। সেই টাকা ব্যবহার করা হবে।’ কিন্তু তাতে যে চাহিদা ও জোগানে বিস্তর ফারাক! সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তর না পেয়েই রেগে যান জাভড়েকর। এড়িয়ে যেতে বলেন, ‘সেই চিন্তা অর্থমন্ত্রী করবেন। সাংবাদিকদের ভাবার দরকার নেই।’
ডিজিটাল বোর্ড প্রকল্পের কথা গত বাজেটে প্রস্তাব করেছিলেন অরুণ জেটলি। সেই প্রস্তাব অনুযায়ী আগামী তিন বছরে দেশের সমস্ত কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলোয় ডিজিটাল বোর্ড চালু হওয়ার কথা। এর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে মূলত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি এবং কলেজ পড়ুয়াদের প্রথাগত বইয়ের পাশাপাশি ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিজ্ঞান ও অঙ্ক শিক্ষার কথাই ভাবা হয়েছে। তবে আদৌ কি তা হবে? এ নিয়ে প্রশ্ন ইঠছেই।
কারণ আগামী ১ এপ্রিল থেকে মোদী সরকার প্রকল্প শুরু করতে চাইলেও ডিজিটাল মাধ্যমের বিষয়বস্তুই তৈরি করাই হয়নি এখনও। মাত্র এক মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র ডেকে এই বিরাট সংখ্যক বোর্ড কেনা সম্ভব কি না, তা নিয়ে কর্তারা এখনো কিছু জানাননি। লোকসভা নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদী এই প্রকল্প ঘোষণা নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠেছেই। রয়েছে সন্দেহের অবকাশও।