মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও। তাই রাজ্যবাসীর স্বাস্থ্যের দিকে সর্বদাই কড়া নজর থাকে তাঁর। এবার ডেঙ্গি-সহ মশাবাহিত বিভিন্ন রোগের মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের দফতরগুলিকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রেখে কাজ করার নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মশাবাহিত রোগ মোকাবিলার রূপরেখা স্থির করতে মঙ্গলবার নবান্নে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন। পরে নবান্ন থেকে বেরোনোর সময় তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় এ বছর জানুয়ারি মাস থেকেই প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। মুখ্য সচিবও কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলবেন, যাতে তাদের দফতরগুলি পরিষ্কার রেখে তারা ডেঙ্গি মোকাবিলায় সাহায্য করে।’
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মেট্রো, বন্দর, কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরগুলিতে এবং যেখানে মেট্রোর কাজ চলছে সেখানে যাতে জল জমে না থাকে তার জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হবে কেন্দ্রকে। কেন্দ্রের অধীনস্থ পরিত্যক্ত বাড়িগুলিতেও নজর দিতে বলা হবে। তাছাড়া স্থানীয় ক্লাব, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, স্কুল-কলেজগুলিকেও ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতার কাজে লাগানো হবে। ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতার কাজে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদেরও যুক্ত করা হবে।’ বৈঠকে তিনি ছাড়াও পুরো ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, স্বাস্থ্য দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত, মুখ্য সচিব মলয় দে, স্বাস্থ্য সচিব রাজীব সিনহা, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক বীরেন্দ্র, কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া পূর্ত, সেচ, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে নির্মাণ ও মেরামতির কাজ শেষ হলে সঙ্গে সঙ্গে খানাখন্দ বুজিয়ে ফেলার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলিকে নিকাশি ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে বলেছেন। নালা-নর্দমা ও জলাভূমিতে গাপ্পি-সহ মশার লার্ভাভুক মাছ ছাড়তে বলেছেন। বিধাননগর পুর এলাকায় গত বছর ডেঙ্গির প্রকোপ তুলনামূলক বেশি থাকায় মুখ্যমন্ত্রী সেখানকার মেয়র সব্যসাচী দত্তকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেন। গত বছর রাজ্যের ৯টি জেলা ডেঙ্গিপ্রবণ ছিল। ওই জেলাগুলিতেও বিশেষ নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গ্রামাঞ্চলে রোগ দমনের জন্য পঞ্চায়েত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও স্বাস্থ্য দপ্তরকে একযোগে কাজ করতে বলা হয়েছে। ডেঙ্গি–সহ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা প্রচারের বিষয়টিকে মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন বলে নবান্ন সূত্রে জানা গেছে। এই কাজে কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে শামিল করার কথা ভাবা হচ্ছে। মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য দফতর পর্যাপ্ত অর্থ খরচ করবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।