আরও ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হতে চলেছে বাংলায়। সোমবার নিউ টাউনে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি প্রেসিডেন্সি, যাদবপুরের মতো রাজ্যের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা যাতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াতে যেতে পারেন, সে ব্যাপারেও রাজ্য সরকার পরিকল্পনা করছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সচিব আর এস শুক্লা, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া-সহ বিশিষ্টরা।
অল্প সময়ের মধ্যে নতুন ক্যাম্পাস তৈরি হয়ে যাওয়ায় প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে রাজ্য সব ধরনের সাহায্য করবে বলে আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। ১০ একর জমির ওপর তৈরি হওয়া এই ক্যাম্পাসে থাকছে, স্কুল অফ বায়োটেকনোলজি, স্কুল অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্স, স্কুল অফ আর্থ সায়েন্সেস, স্কুল অফ পাবলিক পলিসি এবং স্কুল অফ ডেটা ইনফর্মেশন, সাইবার সিকিউরিটি, বিগ ডেটা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস তৈরির কাজ কতদূর এগিয়েছে, গতকাল তারও খোঁজ নেন মমতা।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক পড়ুয়া প্রেসিডেন্সিতে পড়তে আসেন। আবার এখানকার অনেকে বাইরে পড়তে যান। প্রেসিডেন্সি, যাদবপুরের অধ্যাপকেরা যাতে অন্য জায়গায় ক্লাস নিতে পারেন তার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তা সে বছরে ৪ দিনের জন্য হলেও। তাঁরা যাতে সম্মানের সঙ্গে এ কাজ করেন, তা দেখা হচ্ছে। এখানকার অধ্যাপকদের নামটাই বড় নাম। তাঁরা যেখানে পড়াতে যাবেন, সেই প্রতিষ্ঠান যাতে গর্ববোধ করতে পারে। যাতে ওঁরা বলতে পারেন, দেখো আমার কলেজে কারা এসেছিলেন।’
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘২ বছর আগে শিলান্যাস করা হয়েছিল। এত তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে ফেলতে পারবেন ভাবিনি। আমরা অনেকে কাজ শুরু করি, কিন্তু শেষ করতে পারি না। শুরু হলে ভাবি শেষ কবে হবে জানি না। উদ্যোগ না থাকলে কোনও কাজ হয় না। অনেকে কাজ করেন না। শুধু ভাষণ দিয়ে যান। করে দেখানো বড় কথা। মুখে বললাম আর হয়ে গেল, তা যেন না হয়। সময়ের আগে কাজ শেষ করাটাই বড় কথা।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন যে, ‘প্রেসিডেন্সি বাংলার শিল্প, গবেষণা, সভ্যতা, অহংকারে জড়িয়ে। এই অহংকার মানে কোনও ঔদ্ধত্য নয়। বাংলার রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সভ্যতার বোধোদয়ে পথের দিশারি প্রেসিডেন্সি। তৃতীয় নেত্রের মতো কাজ করেছে। যখন কেউ পারেনি, তখন প্রেসিডেন্সি সে কাজ করেছে। বাংলার নবজাগরণের সঙ্গে যুক্ত প্রেসিডেন্সি। আগামী ২০০ বছরের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করবে প্রেসিডেন্সি।’
তিনি আশা করেন, এই প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মানের হয়ে উঠবে। বিশ্বের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একযোগে উচ্চারিত হবে প্রেসিডেন্সির নাম। তাঁর কথায়, ‘শুভ চিন্তা মানুষকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। এই প্রতিষ্ঠান শিক্ষা, চেতনা, ভাষা দিয়েছে। আরও বড় হতে হবে। আরও এগিয়ে যেতে হবে। দেখতে চাই, বাংলার বিশ্ববিদ্যালয় গোটা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। দেখতে চাই, প্রেসিডেন্সি এক নম্বরে রয়েছে। প্রয়োজন হলে বলবেন। কেউ ছোট নয়। পদবি, শিক্ষা যা-ই হোক না কেন, কর্মজগৎ অনেক বড়।’ তিনি আরও জানান, এখন ৫৮ লক্ষ কন্যাশ্রী রয়েছে। তা ৭৫ লক্ষ ছাড়িয়ে যেতে পারে।