মঙ্গলবারই প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল সিএজি রিপোর্ট। কিন্তু গতকাল তা না হওয়ায়, আজই প্রকাশ পেল সেই রিপোর্ট। যা নিয়ে ধুন্ধুমার কান্ড ঘটে গেছে সংসদে। রিপোর্টে জানানো হয়েছে ইউপিএ জমানার চেয়ে মোদী জমানার রাফাল চুক্তি অনেক সস্তা! যুদ্ধবিমান পিছু দাম পড়ছে ২.৮ শতাংশ কম। তবে আশ্চর্যজনক ভাবে রিপোর্টে দামের বিষয়টি উল্লেখই করা হয়নি। আবার এ দিনই ‘দ্য হিন্দু’ সংবাদপত্র একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, রাফাল বিমান কেনার ক্ষেত্রে বেশি দামেই চুক্তি করা হয়েছিল। ফলে নিজেদের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে শোরগোল শুরু করে দেয় বিরোধীরা।
লোকসভা ভোটের আগে বর্তমান এনডিএ জমানায় এটাই শেষ সংসদের অধিবেশন। সেই অধিবেশনেরও শেষ দিন আজ বুধবার সংসদে পেশ হল সিএজির রিপোর্ট। ইউপিএ জমানায় ১২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্থান অ্যারোনটিকস লিমিটেড বা হ্যালের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তি বাতিল করে ফ্রান্সের সংস্থা দাসো অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে ৩৬টি রাফাল কেনার চুক্তি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকার। এই চুক্তিতেই দুর্নীতির অভিযোগে সরব কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। সেই বিতর্কের মধ্যেই দুই চুক্তির তুল্যমূল্য বিচার করে তৈরি হয়েছে সিএজি রাজীব মেহর্ষির রিপোর্ট।
এনডিএ জমানার রাফাল চুক্তি যখন হয়, তখন রাজীব মেহর্ষি ছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থসচিব। কংগ্রেস বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, ২০১৬ সালে ওই চুক্তির সময় রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রতিদিনই নতুন নতুন তথ্য এনে মোদী সরকারকে আক্রমণ করে চলেছেন রাহুল গান্ধী। সিএজি রিপোর্ট নিয়ে দলের বক্তব্য, মেহর্ষি জ্ঞাতসারেই দুর্নীতি হয়েছিল। তিনিও চুক্তির ‘অংশীদার’ ছিলেন। তাই নিজেকে বাঁচাতেই তিনি রাফাল নিয়ে দুর্নীতির ইঙ্গিতও পাওয়া যায় এমন রিপোর্ট তিনি দেবেন না। রাফাল চুক্তির অসঙ্গতি তাঁর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতেই হয়েছিল।
এদিন রিপোর্ট পেশের পর লোকসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘এই রিপোর্টের কোনও মূল্য নেই।’ মায়াবতীর মন্তব্য, ‘রাফাল চুক্তি না সম্পূর্ণ, না সঠিক।’ উল্লেখ্য, বিরোধীরা আগেই ‘পক্ষপাতমূলক’ বলে অভিযোগ তুলে সিএজির রিপোর্ট খারিজ করেছিল। প্রশ্ন তুলেছিল, সিএজি-র স্বার্থের সংঘাত নিয়েও। এমনকি গতকালও নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এই রিপোর্টকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘চৌকিদার অডিটর জেনারেল’ রিপোর্ট।