সিবিআই-এর অধিকর্তা হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও একজন বাঙালি কৃতী আইপিএস অফিসার রীনা মিত্রকে কৌশলে সেই পদ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তাঁকে যোগ্য সম্মান দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ করা হল রীনা মিত্রকে। আর এভাবেই বাঙালিকে বঞ্চনার পাল্টা দিলেন মমতা।
নবান্ন সূত্রে খবর, কয়েকদিনের মধ্যেই রীনা তাঁর দায়িত্বভার বুঝে নেবেন। জানা গেছে, রাজ্যের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি পুলিশের পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে সরকারকে পরামর্শও দেবেন রীনা।
১৯৮৩-র মধ্যপ্রদেশ ক্যাডারের আইপিএস রীনার জন্ম বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটীতে। তিনিই বাংলার প্রথম আইপিএস অফিসার। সিবিআই-এর দূর্নীতি দমন শাখাতেও কাজ করেছেন তিনি। রীনার মতো সৎ ও নির্ভীক অফিসার যাতে সিবিআই অধিকর্তা পদে বসতে না পারেন, তার জন্যই সিলেকশন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া ইচ্ছে করে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগও ওঠে। রীনাকে সরকারি পদে বসিয়ে মমতা প্রকারন্তরে মোদীকেই বার্তা দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
প্রসঙ্গত, আইপিএস হিসেবে রীনা মিত্রের উজ্জ্বল কেরিয়ার। ১৯৯৯–এ পুলিশ পদক পেয়েছেন। ২০০৮–এ রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক। মধ্যপ্রদেশে থাকাকালীন ৩টি জেলার ডিএসপি পদে ছিলেন। ছিলেন ডিআইজি এবং আইজি (সিআইডি) পদে। কর্মজীবনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল, দুর্নীতি দমনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেওয়া। মধ্যপ্রদেশের ভিজিল্যান্স দপ্তরে বহুদিন ছিলেন। এছাড়াও বন্যপ্রাণ অপরাধ দমনের জন্য যে দল গঠিত হয়েছিল, তার শীর্ষে ছিলেন তিনি। সিবিআইয়ে দীর্ঘ ৫ বছর কাজ করেছেন। এছাড়াও রেল বোর্ড, পরিবেশ মন্ত্রকেও কাজ করেছেন। ২০১৪ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড ফরেনসিক সায়েন্সে অধিকর্তা হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে বিশেষ (অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা) সচিব হিসেবে কর্মজীবন শেষ করেন।
দিল্লীতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হলে রীনা বলেন, ‘আমি আজ বিকেল ৪টে নাগাদ জেনেছি। আমি এখন দিল্লিতেই রয়েছি।’ নতুন দায়িত্ব পেয়ে কেমন লাগছে? বললেন, ‘খুব খুশি। এবার নিজের রাজ্যে কাজ করতে পারব। মধ্যপ্রদেশে বেশিরভাগ সময় কাজ করেছি। অনেকেই ফোন করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।’
