বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ‘সুকন্যা’ প্রকল্প কর্মসূচি মহিলাদের শেখাচ্ছে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ। স্কুল কলেজ পড়ুয়া থেকে চাকরিজীবী মহিলা, এমনকি গৃহবধূরাও অংশ নিয়েছিলেন এই প্রকল্পের কর্মসূচিতে। বইমেলার মুক্তমঞ্চে সেই প্রশিক্ষণের কিছুটা তুলে ধরা হল সাধারণ মানুষের কাছে।
রাস্তায় কেউ আক্রমণ করলে ক্যারাটে জুজুৎসুর প্যাঁচে কীভাবে ধরাশায়ী করতে হয়, তা মহিলারা শিখেছেন হাতেকলমে। শেখাচ্ছেন বিধানগর কমিশনারেটের উদ্যোগে একটি প্রশিক্ষণ শিবির। তিনমাস চলেছে মহিলাদের আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণের এই শিবির। বইমেলার মুক্তমঞ্চে দর্শকদের সামনে এইসব শিক্ষার্থী দেখালেন মার্শাল আর্টের সাহায্যে আত্মরক্ষার কৌশল। অনুষ্ঠানে সফলদের হাতে শংসাপত্রও তুলে দিলেন বিধাননগর কমিশনারেটের কর্তারা।
ইভটিজিং–সহ মহিলাদের ওপর আক্রমণ হলে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, তার শিক্ষা দিচ্ছে এই প্রশিক্ষণ ক্ষেত্র। এক শিক্ষার্থীর বয়স ৭০ বছর। কেএমডিএ-এর অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ঝর্না মৈত্র। তিনি বললেন, ‘দুষ্কৃতীরা বয়স দেখে না। ৫ থেকে ১০০ সব বয়সি মহিলারাই তাদের ‘টার্গেট’। বিপদে পড়লে তাদের মোকাবিলা কীভাবে করব, সেই আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। নবীন প্রজন্মকেও বলছি, ‘ভয় পেয়ে পিছিয়ে না থেকে এগিয়ে এসো। আত্মরক্ষার জন্য এই প্রশিক্ষণ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।’
বিধাননগর কমিশনারেটের উপনগরপাল (সদর) অমিত পি জাভালগি বলেন, ‘সুকন্যা প্রকল্পে মূল উদ্দেশ্য হল মহিলাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো। অনভিপ্রেত ঘটনার মুখে পড়লে তাঁরা যাতে নিজেদের রক্ষা করতে পারেন। এদিন শিক্ষার্থীদের প্রদর্শন দেখে আমি আত্মবিশ্বাসী যে, তাঁরা সবরকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারবেন। পরবর্তিকালে স্কুল–কলেজে গিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’ শুধু নিজের রক্ষা করাই নয়, মহিলারা যে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করতে পারেন এবং নিজের পাশাপাশি অন্য মহিলাদেরও অনভিপ্রেত ঘটনার থেকে রক্ষা করতে পারে সেই মানসিক শক্তি শিক্ষার্থীরা পেয়েছেন এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে।
অতিরিক্ত উপনগরপাল অনুরাধা মণ্ডল জানান, স্কুলের মেয়েদের আত্মরক্ষার পাঠ দিতে প্রথম সুকন্যা প্রকল্পে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। পরবর্তিকালে গৃহবধূ, কর্মরত মহিলা–সহ সর্বস্তরের মহিলাদের এর আওতায় আনা হয়েছে।