বয়স বড় বালাই। বিশেষ করে খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে তো অবশ্যই। বয়স মোটামুটি তিরিশের ওপারে গেলেই আস্তে আস্তে অবসর নেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করে দেন খেলোয়াড়েরা। সেখানে মেসির বয়স এখন ৩১ বছর। যদিও এখনও তিনি স্বমহিমায়, তবে মেসিকেও তো একদিন অবসর নিতেই হবে। প্রশ্ন হল, তখন বার্সেলোনার কি হবে? এই বিষয়টি মাথায় রেখেই এখন থেকে দলকে গড়ে তুলছেন বার্সা সভাপতি হোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ।
জাভি থেকে ইনিয়েস্তা, পুয়োল থেকে ভালদেস, আবিদাল থেকে আলভেস, পেদ্রো থেকে ভিয়া—বার্সেলোনার স্বর্ণযুগের খেলোয়াড়দের প্রায় সবাই-ই হয় অবসর নিয়ে নিয়েছেন, না হয় ক্লাব ছেড়ে অন্য ক্লাবের হয়ে খেলতে চলে গিয়েছেন। একদিন অবসর নেবেন মেসিও। মেসিকে ছাড়া তখন খেলতে হবে বার্সেলোনাকে। তখন যেন বার্সার শক্তি কমে না যায়, সে লক্ষ্যে এখন থেকেই কাজ করা শুরু করে দিয়েছে বার্সা, এমনটাই জানিয়েছেন ক্লাব সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ।
মেসির সঙ্গে বার্সা সর্বশেষ চুক্তি নবীকরণ করেছে ২০১৭ সালে। এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে ২০২১ সালে। মেসির বর্তমান চুক্তির মেয়াদ আরও দু’বছর থাকলেও বার্তোমেউ মনে করেন, মেসির অবসর নিতে এখনো অনেক দেরি। তিনি বলেছেন, ‘আমি জানি একদিন না একদিন মেসি অবশ্যই অবসর নেবে। আমাদের সে দিনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তুলতে হবে বার্সেলোনাকে। সে লক্ষ্যেই প্রতিভাধর তরুণ খেলোয়াড়দের আমরা বার্সেলোনাতে নিয়ে আসছি। এটা আমাদের দায়িত্ব।’
বার্তোমেউ যে মিথ্যে বলেননি, সেটি দলবদলের বাজারে গত দুই বছর ধরে বার্সেলোনার কার্যক্রম দেখলেই বোঝা যায়। দলের রক্ষণভাগে এসেছেন নেলসন সেমেদো, ক্লেমেন্ত লেংলেত ও জ্যাঁ-ক্লাইর তোদিবোর মতো তরুণ তারকা। আয়াক্সের ডাচ প্রতিভা ম্যাথিস ডি লিটকে সেন্টারব্যাক জেরার্ড পিকের উত্তরসূরি করার ব্যাপারেও বেশ আগ্রহী ক্লাবটি। মিডফিল্ডে এসেছেন ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং, আর্থার মেলো, ফিলিপ কুতিনহোর মতো তারকারা। আক্রমণভাগে আনা হয়েছে ওসমানে দেম্বেলে ও মালকমকে।
অন্যদিকে, বার্সার বয়সভিত্তিক দল থেকেও উঠে আসছেন রিকি পুইগ, কার্লেস আলেনার মতো খেলোয়াড়েরা। এর পাশাপাশি নেইমারকে ফিরিয়ে আনারও তোড়জোড় শুরু করেছেন বার্সা কর্মকর্তারা। এতকিছু করার পেছনে লক্ষ্য একটাই, ভবিষ্যতে মেসিহীন বার্সা যেন হোঁচট না খায়। বার্সার সভাপতি হিসেবে বার্তোমেউর মেয়াদ আর দুই বছর। এই দুই বছরে বার্সেলোনার অবস্থান আরও শক্ত করতে চান তিনি। তিনি জানান, ‘আমার মেয়াদ আর দুই বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। তাই পরবর্তী সভাপতি আসার আগ পর্যন্ত বার্সাকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে রেখে যাওয়ার দায়িত্ব আমার।’