গাজিয়াবাদ : বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশে(Uttarpradesh )নারীসুরক্ষা শব্দটি যে ক্রমেই ‘সোনার পাথরবাটি’ হয়ে উঠছে, তা হাতেনাতে প্রমাণ হয়ে গেল আরও একবার। মুখে বড় বড় বুলি আউড়ে চলেছেন যোগী, অথচ নিজের রাজ্যে নারীদের নিরাপত্তা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ তিনি। এবার উত্তরপ্রদেশে গণধর্ষণের শিকার হলেন এক দলিত তরুণী। তারপর মানসিক অবসাদে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতেই উদ্ধার করা হয় সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত নির্যাতিতার দেহ।
ঘটনাটি ঘটেছে গাজিয়াবাদের(Uttarpradesh )লোনি এলাকায়। দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ এবং তাঁর আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য দেখা দেয় এলাকায়। অভিযোগ, যোগী প্রশাসনের অপদার্থতার কারণেই গেরুয়া উত্তরপ্রদেশে চলছে ধর্ষণরাজ। তাঁর উপরে নির্যাতনের সুবিচার হবে না বুঝেই আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন ওই তরুণী। তুমুল ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসী এবং তরুণীর আত্মীয়রা। ধর্ষকদের গ্রেফতারের দাবিতে থানা ঘেরাও করে উত্তেজিত জনতা। অভিযুক্ত ৩ জনকে এখনও গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন? উঠছে প্রশ্ন।

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ৩ দিন আগে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয় ওই দলিত তরুণীকে। গত সোমবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেকক্ষণ খোঁজাখুজির পরে ৬ কিমি দূরে নিঠোরি গ্রামে বিবস্ত্র এবং গুরুতর জখম অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁকে। তরুণী তাঁর বাবাকে জানান, পথ হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। তিন যুবক তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেবে বলে বাইকে তুলে নিঠোরি গ্রামে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।
১৯ আগস্ট দিল্লির ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান বিহেভিয়ার অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেসে ভর্তি করা হয় নির্যাতিতাকে। ২০ আগস্ট তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। কিন্তু গভীর অবসাদের শিকার হন তিনি। চিকিৎসার পাশাপাশি তাই কাউন্সেলিংও করা হচ্ছিল ওই তরুণীকে। কিন্তু কিছুতেই কাটছিল না অবসাদ। বাড়িতে ফিরেও চুপচাপ ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁর। অনেক ডাকাডাকির পরেও সাড়া না মেলায় দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকে পরিবারের লোকেরা দেখেন, গলায় ওড়না বাঁধা অবস্থায় সিলিং ফ্যানে ঝুলছে নির্যাতিতা তরুণীর দেহ! পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, ধর্ষকদের শাস্তি হবে না, এই আশঙ্কা এবং হতাশার বশবর্তী হয়েই আত্মহত্যা করেছেন তাঁদের মেয়ে।