কলকাতা : মঙ্গলবার দিল্লি রওনা হওয়ার আগে এসআইআর ইস্যুতে ফের গর্জে উঠলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।(Abhishek Banerjee) সাফ জানালেন, ভোটার তালিকায় যদি সত্যিই গরমিল থাকে, তবে তৎকালীন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হোক।
অভিষেকের কথায়, কমিশনের যুক্তিমতো যদি মেনে নেওয়া হয় ভোটার তালিকায় গরমিল রয়েছে, তার অর্থ গত বছরের লোকসভা ভোটও এই গরমিল-সহ ভোটার তালিকার ভিত্তিতেই হয়েছে। সেই ভোট থেকেই প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে যদি ওই ভোটার তালিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকে, তা হলে পুরো কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভারই ইস্তফা দেওয়া উচিত।
Read More: এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী
তৃণমূল সাংসদের(Abhishek Banerjee) বক্তব্য, “আপনারা যদি ঠিক হন, যদি এই ভোটার তালিকায় গরমিল থাকে, তা হলে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত তৎকালীন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিং’ শুরু করা হোক। তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন থেকে এফআইআর করা হোক। তাঁর তত্ত্বাবধানে এক বছর আগে যে সাধারণ নির্বাচন হয়েছে, সেখানে যদি সত্যিই গরমিল থাকে, ভুয়ো ভোটার থাকে, বাংলাদেশি থাকে, তবে তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু করতে হবে।”

পাশাপাশি তিনি জানান, “প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে তাঁরা (বিজেপি সাংসদেরা) ইস্তফা দিন। সারা দেশের মানুষ এসআইআর-কে স্বাগত জানাবে। আমি আমার কথাও বলছি। বিজেপি শুরু করুক না, আমরা সকলে ইস্তফা দেব। কোনও অসুবিধা নেই। লোকসভা ভেঙে দিয়ে সারা দেশে এসআইআর হোক। তার পরে আবার নির্বাচন হোক।”
এদিন অভিষেক স্পষ্টতই বুঝিয়ে দেন, সোমবারের কর্মসূচি যা ছিল, আগামী দিনে তার চেয়েও বড় প্রতিবাদ কর্মসূচির জন্য প্রস্তুত ঘাসফুল শিবির। কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, “তারা দেশটাকে নিজেদের সম্পত্তি ভেবে জোরজবরদস্তি সব প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে। এখন মানুষের ভোটাধিকারটুকুও কেড়ে নিতে চাইছে। আমরা এটা করতে দেব না। কাল যা দেখেছেন, তা সবে শুরু। বাংলার একটা মানুষেরও যদি ভোটাধিকার কাড়ে, তবে এক লক্ষ মানুষ নিয়ে নির্বাচন কমিশন ঘিরব। বিজেপির কোনও নেতা বাঁচাবে না।”
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1955232432015528079
দেশের আমজনতার ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে বিজেপি দেশকে ‘রাজনৈতিক সম্পদ’ হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছে বলেও অভিযোগ তোলেন অভিষেক। বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের হেনস্থার অভিযোগেও সরব হন তিনি। তাঁর বক্তব্য, এ রাজ্যে নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরে গত সাড়ে চার বছর ধরে বাংলার মানুষের প্রতি প্রতিহিংসাপরায়ণত আচরণ করেছে বিজেপি। রাজ্যবাসীকে ‘বাংলাদেশি’ বলা হয়েছে। বাংলার মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেলে বিজেপির জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।হ অভিষেকের বক্তব্য, ১০০ দিনের কাজের টাকার দাবিতে যন্তর মন্তরে সভার সময় দিল্লি পুলিশ যে ভাবে নিগ্রহ করেছিল, সোমবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
এদিন নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপির মধ্যে আঁতাতের তত্ত্বও তুলে ধরতে ভোলেননি অভিষেক। “কমিশন একটি নিরপেক্ষ সংস্থা। কমিশনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠলে বিজেপি কেন ঢাল হয়ে দাঁড়াবে? কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। অভিষেকের কথায়, “তারা (কমিশন) যদি এতটাই নিরপেক্ষ থাকে, তবে সরাসরি সাংসদদের সঙ্গে আলোচনায় বসুক। বিজেপির সরকার সব প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের ক্রীতদাস এবং তল্পিবাহকে পরিণত করেছে”, বক্তব্য তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ডের।