পাটনা : বৃহস্পতিবারই বিজেপি জোটশাসিত বিহারে ঘটে গিয়েছে এক হাড় হিম করা ঘটনা। যার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠছেন প্রত্যেকে। পাঁচ জন ঢুকে পড়ল হাসপাতালে। চার জন টুপি পরা, এক জন খালি মাথায়। কোমর থেকে পিস্তল বার করল সকলেই। তার পর এক এক করে ঢুকে পড়ল আইসিইউতে। হাসপাতালের করিডর নিস্তব্ধ। মাত্র ৩০ সেকেন্ড পর একাধিক গুলির আওয়াজ। তার পরই টুপি পরা চার দুষ্কৃতী দরজা খুলে বারান্দা দিয়ে ছুটে বেরিয়ে গেল! কয়েক সেকেন্ড পর আর এক জনকে বেরোতে দেখা গেল। ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই তোলপাড় সারা রাজ্য। প্রশ্নের মুখে পড়েছে হাসপাতালের নিরাপত্তা। আঙুল উঠেছে প্রশাসনের দিকেও।
সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত দুষ্কৃতী। নাম তৌসিফ বাদশাহ। পুলিশ সূত্রে খবর, যাকে খুন করা হয়েছে, ঘটনাচক্রে সেও একজন দুষ্কৃতী। সম্প্রতি প্যারোলে ছাড়া পেয়ে অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। নাম চন্দন মিশ্র। তার বিরুদ্ধে ২৪টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ১২ খুনের মামলা। পুলিশের নিরাপত্তায় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল চন্দনের। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় দুষ্কৃতীরা হাসপাতালে ঢোকে। তার পর চন্দনকে গুলি করে খুন করার পর হাসপাতাল ছাড়ে। দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় ছ’জন ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। পাঁচ জন হাসপাতালে ঢোকে। হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করছিল একজন।
হাসপাতালে গুলির আওয়াজে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি। সেই সুযোগে ভিড়ে মিশে হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে এসেছিল পাঁচ দুষ্কৃতী। চন্দনকে খুনের পর হাসপাতালের বাইরে বন্দুক উঁচিয়ে উল্লাস করে তারা। তারপর দু’টি বাইকে ছ’জন মিলে চম্পট দেয়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ছ’জনকেই চিহ্নিত করেছে হামলার মূলচক্রী তৌসিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, হাসপাতাল সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিল তৌসিফ। কোথা দিয়ে নিশ্চিন্তে হাসপাতালে ঢোকা যাবে, তা সে জানত। চন্দনকে খুনের আগে রেকিও করা হয়েছিল হাসপাতালে। তার পরই পুরো পরিকল্পনা করে হাসপাতালে ঢুকে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। হাসপাতালে ঢুকে এক রোগীকে খুনের ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা এবং হাসপাতালে রোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সরব হয়েছেন আরডেজি নেতা তথা বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। ‘‘অপরাধীদের নিরাপত্তা দিচ্ছে সরকার। হাসপাতালে দুষ্কৃতীরা ঢুকল, রোগীকে খুন করে আবার চম্পটও দিল! বিহারে কি কেউ আর নিরাপদ? এ ধরনের ঘটনা আরজেডির শাসনকালে কেউ দেখেছেন?’’, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।