নয়াদিল্লি: হাসিনা সরকারের পতন এবং মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার সরকার গঠনের পর থেকেই ওপার বাংলায় সাহিত্যিক থেকে সঙ্গীতশিল্পী, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বাড়িঘর হামলার মুখে পড়েছে। মাস খানেক আগেই বাংলাদেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈতৃক ভিটেয় ভাঙচুর করেছিল দুষ্কৃতীরা। এবার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িও ভাঙার মুখে। খবর পেতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। মুখ্যমন্ত্রী সরব হতেই ইউনূস সরকারকে বার্তা দিল কেন্দ্রীয় সরকার।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদে সরব হন। ইউনূস সরকারকে অনুরোধ করেন এই বাড়ি না ভাঙার জন্য। একইসঙ্গে ভারত সরকারেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপরই ভারত সরকারের তরফে এই বাড়ির ঐতিহাসিক গুরুত্ব, বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে যোগকে উল্লেখ করে বলা হয় যে এই বাড়ি ভাঙার সিদ্ধান্ত যেন পুনর্বিবেচনা করা হয়। তার বদলে সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করে সাহিত্য়ের মিউজিয়াম গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, যা দুই দেশের সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনকেই তুলে ধরবে। ভারত সরকারের তরফে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটে সংস্কারের কাজে সহযোগিতার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের পুরাতত্ত্ব বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাড়িটি ১০০ বছরের বেশি পুরনো। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর বাড়িটি বাংলাদেশের সরকারের হাতে আসে। অন্তবর্তীকালীন প্রশাসন সূত্রে খবর বিগত ১০ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাড়িটি যেকোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়ে বিপদ ঘটতে পারে। এর জায়গায় সেমি-কংক্রিটের একটি বিল্ডিং তৈরি করা হবে বলে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সে নিয়েই এবার মমতার ক্ষোভে সায় দিয়ে ইউনূস সরকারকে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাল কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় হরিকিশোর রায় চৌধুরী রোডে অবস্থিত সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি। এটি সত্যজিৎ রায়ের ঠাকুরদা তথা সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর বাড়ি ছিল। এই বাড়িটি বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাডেমির ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হত। তবে ইউনূস সরকার বর্তমানে এই বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু করেছে। যা নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।