কলকাতা: একের পর এক বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে৷ ওড়িশায় পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিককে আটক করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপর দিল্লিতেও বীরভূমের পাইকরের ছ’জন শ্রমিককে আটক করা হয় বলে অভিযোগ। এবার আগামী বুধবারই এই দুই মামলার একসঙ্গে শুনানি হবে কলকাতা হাইকোর্টে।
ওড়িশায় বেশিরভাগ মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূমের পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করা হয়েছে। বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁদের সঙ্গে পরিবারের লোকেরা যোগাযোগ করতে না পারার পরেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। পরিবারের সদস্যেরা আদালতে মামলা দায়ের করেন। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ওড়িশার মুখ্যসচিবকে চিঠিও লিখেছিলেন। তা নিয়ে টানাপড়েনের আবহে ওড়িশা থেকে বেশ কয়েক জন শ্রমিকের রাজ্যে ফিরে আসার খবর প্রকাশ্যে এসেছিল।
সোমবার আদালতে মামলাকারীর আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলের পরিবারের সদস্যেরা ওড়িশা থেকে এ রাজ্যে ফিরে এসেছেন। নবান্ন সূত্রে খবর, বেশির ভাগ শ্রমিকই রাজ্যে ফেরত এসেছেন। বাকিদের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। দ্রুত সেগুলিও মিটে যাবে।
ওড়িশায় বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রাখা হয়েছে, অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে হিবিয়াস কর্পাস মামলা দায়ের হয়। পরিযায়ীদের আটকে থাকা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ একাধিক প্রশ্ন তোলে। আদালতের প্রশ্ন, কেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রাখা হয়েছে? কিসের ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে? কোনও এফআইআর দায়ের হয়েছে কি? আটক করার পরে ওই পরিযায়ীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? এখন তাঁরা কোথায় রয়েছেন?
পাশাপাশি আদালত জানায়, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে এই প্রশ্নগুলির উত্তর ওড়িশার মুখ্যসচিবের কাছ থেকে আনার জন্য সমন্বয় রক্ষা করতে হবে। এই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় আদালত। সেই জবাব দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর পরেই নবান্নের তরফে ওড়িশার মুখ্যসচিবকে চিঠি লেখা হয়।
দিল্লিতেও বীরভূমের পাইকরের ৬ জন শ্রমিককে আটক করা হয় বলে অভিযোগ। কাজের জন্য দিল্লিতে গিয়েছিলেন ওই শ্রমিকেরা কিন্তু তাঁরা আর বাড়ি ফিরছেন না। এমনকী এখনও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। পরিবারের লোকেরা তাঁরা কোথায় আছেন, কী করছেন, কিছুই জানেন না। এই বিষয়ে দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে হাই কোর্টে মামলা হয়। সেই মামলার শুনানিও হবে বুধবার।