প্রতিবেদন : শনিবারই প্রকাশ্যে এসেছে আহমেদাবাদের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট। রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে নাকচ করা হয়েছে অন্তর্ঘাত বা পাখির ধাক্কায় দুর্ঘটনার তত্ত্ব। দুর্ঘটনার ঠিক আগের মুহূর্তে ইঞ্জিন বন্ধ হওয়া নিয়ে বিমানের দুই পাইলটের মধ্যে উদ্বিগ্ন কথোপকথন এসেছে সামনে। বিমানের ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে পাইলটদের শেষ মুহূর্তের কথোপকথনের রেকর্ড পাওয়া গিয়েছে।
মনে করা হচ্ছে, শেষ মুহূর্তে বিমানের দুই ইঞ্জিনেরই জ্বালানি একসঙ্গে বন্ধ হয়ে যায়। বিমান দুর্ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) শনিবার তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ১৫ পাতার সেই রিপোর্টে দুর্ঘটনার একেবারে আগের মুহূর্তে দুই পাইলটের কথোপকথন প্রকাশ্যে এসেছে।
রেকর্ড অনুযায়ী, দুর্ঘটনার ঠিক আগের মুহূর্তে এক পাইলট আর এক পাইলটকে প্রশ্ন করেন, “জ্বালানি বন্ধ করে দিলে কেন?” জবাব অপর পাইলট উত্তর দেন, “আমি কিছু বন্ধ করিনি।” এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে জ্বালানির সুইচ ‘রান’ থেকে ‘কাটঅফ’ অবস্থায় চলে যায়। রিপোর্ট বলছে, বিমানটি যখন উপরে ওঠার জন্য গতি পাচ্ছে, তখনই দু’টি ইঞ্জিনের জ্বালানি ‘কাটঅফ’ মুডে চলে যায়। ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলত বিমানের উচ্চতা কমতে থাকে।
এরপর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পাইলটরা ফের বিমানের দুটি ইঞ্জিনের জ্বালানি ফের ‘কাটঅফ’ থেকে থেকে ‘রান’ মুডে নিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে অনেকটাই। একটি ইঞ্জিন চালু হলেও আর একটি ইঞ্জিন চালু করা যায়নি। ফলে পাওয়া যায়নি ‘থ্রাস্ট’। এরপরই ‘মে ডে’ কল দেন পাইলটরা।
তবে কি ঘটেছিল কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি? নাকি সত্যিই কোনও এক পাইলট ভুলবশত জ্বালানি বন্ধ করেছিলেন? উঠছে প্রশ্ন। দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্টে পাখির ধাক্কার উল্লেখ নেই। বিমানসংস্থা বোয়িংকেও কোনও নোটিশ দেওয়া হয়নি। কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগের তত্ত্ব এখনই পুরোপুরি নস্যাৎ করা যাচ্ছে না। অভিশপ্ত বিমানের পাইলট সুমিত সভরওয়ালের ৮২০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। সহকারী পাইলট ছিলেন ক্লাইভ কুন্দার। ১১০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁরও। অভিজ্ঞ দুই পাইলট ভুলবশত জ্বালানি বন্ধ করে দেবেন, তা স্বাভাবিক নয়।