১২৬-এর পরিবর্তে ৩৬টি বিমান কেনার সিদ্ধান্তেই এক লাফে বেড়েছে প্রতিটি বিমানের দাম। আর এ বিষয়ে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণও রয়েছে তাঁর হাতে। রাফাল নিয়ে ‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে এমনই দাবি করেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক এন রাম। তিনি জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী যে চুক্তি করেছেন তাতে রাফালের দাম ৪১.৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ ভাবে ভারতের জন্য তৈরি বিমানের ‘ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (ডি অ্যান্ড ডি) বাবদ যে অতিরিক্ত টাকা নির্মাতা সংস্থাকে দিতে হচ্ছে, তার ফলেই দামের এই বৃদ্ধি।
ওই প্রতিবেদনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ২০১১ সালে ইউপিএ সরকার বিমান–প্রতি যে দাম স্থির করেছিল (১০.০৮ কোটি ইউরো), তার থেকে মোদী সরকারের বিমানের দাম কম (৯.১৭ কোটি ইউরো)। কিন্তু ডি অ্যান্ড ডি বাবদ মনমোহন সিং সরকার যে দাম স্থির করেছিলেন (১.১১ কোটি ইউরো), তার থেকে এই একই খাতে মোদী সরকারের খরচ হয়েছে অনেক বেশি (৩ কোটি ৬১ লক্ষ ইউরো)। ফলে মোট দাম প্রায় দেড় গুণ বেড়ে যায়। ডি অ্যান্ড ডি বাবদ এত খরচের বিরুদ্ধে মত দিয়েছিলেন ‘ইন্ডিয়ান নেগোশিয়েটিং টিম’-এর তিন সদস্য। কিন্তু বাকি চারজন বাড়তি দামের পক্ষে সায় দেন।
এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই আরও খানিকটা মাথাব্যথা বেড়েছে মোদীর। অন্যদিকে, সরব বিরোধীরাও। রাফাল চুক্তির তদন্তে আবারও যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি তুলেছে কংগ্রেস। প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম বলেন, ‘বায়ুসেনার ১২৬টি যুদ্ধবিমানের প্রয়োজন ছিল। নরেন্দ্র মোদী সরকার মাত্র ৩৬টি কিনেছে। এই ভাবে দেশের জাতীয় সুরক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এখন বিমান প্রতি সরকারকে ৪১.৪২ শতাংশ বাড়তি টাকা দিতে হবে। রাফালের দরাদরি যাঁরা করেছেন, তাঁদের যাবতীয় আপত্তি অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এই ঘটনা নজিরবিহীন। কেন এমন হল?’
আবারও জেপিসির দাবি তুলে চিদম্বরম বলেন, ‘রাফাল চুক্তির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হওয়া উচিত।’ এ ছাড়া অফসেট চুক্তি নিয়েও তদন্তের দাবি তুলেছেন তিনি। এইচএএলকে সরিয়ে রেখে অনিল আম্বানিকে বরাত পাইয়ে দেওয়ার পেছনে বড়সড় দুর্নীতি আছে বলেও আবারও অভিযোগ করেছেন তিনি।