শুরু হচ্ছে ব্রিগেড। চলবে বিজেপি বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর কাজ। তবে তার আগেই কলকাতায় আসা জাতীয় নেতাদের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সেরে নিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল সন্ধ্যা থেকেই আলাদা আলাদা করে দেখা করে তাঁদের স্বাগত জানান মমতা। বেশি রাতে চন্দ্রবাবু এবং কুমারস্বামী পৌঁছলে তাঁদেরও হোটেলে স্বাগত জানিয়ে বাড়ি ফেরেন তৃণমূল নেত্রী। অভ্যাগতদের প্রত্যেককেই স্মারক উপহার দিয়েছেন তিনি। নেতারাও তাঁকে স্মারক উপহার দেন। মমতার কথায়, ‘যাঁরা সভায় যোগ দিতে এসেছেন, তাঁদের অনেকেই প্রবীণ। আমি তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁরা এই সমাবেশ নিয়ে উচ্ছ্বসিত।’
মমতা প্রথমেই যান সল্টলেক স্টেডিয়ামের গায়ে একটি পাঁচতারা হোটেলে। সেখানে উঠেছেন প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী শারদ পাওয়ার। তাঁকে শাল পরিয়ে অভ্যর্থনা জানান তিনি। তাঁদের সমাবেশে আসার জন্য অভিনন্দনও জানান। তারপর তাঁর গন্তব্য ছিল আলিপুর চিড়িয়াখানার সামনে একটি পাঁচতারা হোটেল। সেখানে একটি স্যুটে আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অশীতিপর দেবেগৌড়া এবং অরুণাচলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গেগং আপাং। দুজনকেই শাল পরিয়ে বরণ করে নেন মমতা। কুশল বিনিময় করেন। বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক কথাবার্তা হয়। এরপর তিনি দেখা করেন উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের সঙ্গে। সেখানে ছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতারাও। মমতা তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেন। পরে অখিলেশের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন। সবশেষে তিনি দেখা করেন ডিএমকে নেতা স্ট্যালিনের সঙ্গে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি মহাজোটের প্ল্যাটফর্ম তৈরির প্রেক্ষাপট নিয়ে কথাবার্তা বলেন।
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন দলের নেতারাও। অখিলেশ বলেন, ‘দেশ নতুন প্রধানমন্ত্রী চাইছে। সব নেতাকে এক মঞ্চে এনে একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন মমতাদি। বাংলা থেকে পরিবর্তনের যে বার্তা তিনি দিতে চাইছেন, তাতে দেশের মানুষ খুশি।’
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া বলেন, ‘মোদীকে হারাতে আমরা এক জায়গায় এসেছি। তাতে নেত্রী হিসেবে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই বিজেপি-বিরোধী সকলকে একত্রিত করেছেন।’ তাঁর ছেলে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর বক্তব্য, ‘অনেক নেতাই আছেন যাঁরা দূরদর্শী। একটু ধৈর্য ধরুন, বিরোধী শিবিরের নেতা পেয়ে যাবেন।’ প্রায় একই সুরে ফারুক আবদুল্লা বলেন, ‘মমতার নেতৃত্বে আমরা এক জোট হয়েছি। ধৈর্য ধরুন, নেতা পেয়ে যাবেন।’অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবুর মতে, ‘কিছু সিদ্ধান্ত যেমন ভোটের আগে হয়। কিছু আবার নির্বাচনের ফল বেরনোর পরেও হয়। মহাজোটের নেতা হিসেবে মমতাদির অভিজ্ঞতা অনেক। ব্রিগেডের সভা ২০১৯-এর নতুন লক্ষ্য ঠিক করবে।
নেতাদের জন্য গ্র্যান্ড এবং তাজ – দু’টি হোটেলে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শুধু শরদ পওয়ার নিজে রয়েছেন হায়াত-এ। সব হোটেলেই একাধিক বার ঘুরে ঘুরে অতিথিদের স্বাগত জানান মমতা।
