প্রতিবেদন : মোদী-জমানায় দেশজুড়ে নারীসুরক্ষার পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ, তা চোখ-কান খোলা রাখলেই মালুম হয়। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে একের পর এক ঘটে চলেছে নারীনিগ্রহের ঘটনা। কদিন আগেই মধ্যপ্রদেশে হাসপাতালের মধ্যেই ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল এক নার্সকে। এবার আর এক ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্য রাজস্থানে প্রকাশ্য দিবালোকে ব্যস্ত রাস্তায় সরকারি স্কুলের শিক্ষিকাকে কুপিয়ে হত্যা করল তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক। কাছেই নিরাপত্তারক্ষীরা থাকলেন তাঁরা রইলেন কার্যত দর্শক হয়েই! এখনও ধরা পড়েনি খুনি। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে প্রশাসন।
ঘটনাটি রাজস্থানের বাঁশওয়ারা জেলার কালিঞ্জারায়। জানা গিয়েছে, মৃত শিক্ষিকার নাম লীলা তাবিয়ার (৩৬)। তিনি আর্থুনার বাসিন্দা। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বেলাগাম নারীনির্যাতন, ধর্ষণ, খুনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যগুলিতে ধর্ষণের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তৃণমূলের স্পষ্ট কথা, “বাংলার নারীরা সম্মানের সঙ্গে বাঁচে। অপরাধ যদি ঘটে, অপরাধী যে-ই হোক কেউ রেহাই পায় না। বিচার হয় দ্রুত। আর বিজেপি শাসিত রাজ্যে ধর্ষকদের জেল থেকে মুক্তি দিয়ে গলায় মালা পরিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়।”
পাশাপাশি তৃণমূলের অভিযোগ, “বিজেপিই একমাত্র দল, যাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যেই নারীর প্রতি অপরাধে সবচেয়ে বেশি অভিযুক্ত রয়েছে। হাথরস থেকে শুরু করে উন্নাও, কাঠুয়া-কাণ্ড পর্যন্ত ধর্ষকদের রক্ষা করেছে এই দল। শুধু তাই নয়, ধর্ষকদের ফুল-মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছে। প্রমাণ রয়েছে, কারা ধর্ষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে, কারা এই জঘন্য অপরাধকে উৎসাহ দিয়েছে। তাই বিজেপি কখনওই ‘অপরাজিতা বিল’ বা ‘ধর্ষণ-বিরোধী বিল’-কে আইনে পরিণত করতে চায় না।”
উল্লেখ্য, পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা দেশে মহিলাদের বিরুদ্ধে ৪,৪৫,২৫৬টি অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় রুজু হয়েছে ৫১টি মামলা। এর মধ্যে বছরে ৩১,৫৬১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ, প্রতিদিন গড়ে ৮৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে দেশে। প্রতি ১৬ মিনিটে একটি। অথচ, শাস্তির হার ২৭.৪ শতাংশ। দেখা গিয়েছে, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে মহিলাদের নিরাপত্তা একেবারেই অন্ধকারে। এক বছরে রাজস্থানে ৫৩৯৯, উত্তরপ্রদেশে ৩৬৯০, মধ্যপ্রদেশে ৩০২৯, মাহারাষ্ট্রে ২৯০৪, হরিয়ানায় ১৭৮৭, ওড়িশায় ১৪৬৪টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এই পরিসংখ্যান চোখে পড়তেই শিউরে উঠছেন প্রত্যেকে।