প্রতিবেদন : নরেন্দ্র মোদীর সাধের ‘আত্মনির্ভর’ ভারতে বারবার প্রকাশ্যে এসেছে জাতিবৈষম্যের ঘৃণ্য প্রতিচ্ছবি। বেড়েই চলেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের আস্ফালন। বিভিন্ন সময় অকথ্য নির্যাতনের কবলে পড়েছেন সংখ্যালঘু ও দলিত শ্রেণীর প্রতিনিধিরা। এবার ফের ফুটে উঠল সেই মধ্যযুগীয় বর্বরতার চিত্র। ঘটনাস্থল বিজেপিশাসিত ওড়িশার গঞ্জাম। গরুপাচারকারী সন্দেহে দুই ব্যক্তির মাথা অর্ধেক মুড়িয়ে এক কিলোমিটার হামাগুড়ি দেওয়ানো হল! এরপর খেতে বাধ্য করা হল ঘাস ও নর্দমার জল! ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ৫৪ ও ৪২ বছর বয়সী ওই দুই ব্যক্তি ওড়িশার সিঙ্গাপুর এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার দিন তারা দু’টি ও একটি বাছুর নিয়ে গাড়িতে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন। সেসময় গঞ্জাম এলাকায় তাঁদের পথ আটকায় একদল যুবক। গরুপাচারের অভিযোগ তুলে তাঁদের উপর শুরু হয় অত্যাচার। অভিযোগ ওঠে, তাঁদের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছিল। তা না দেওয়ায় মাথা মুড়িয়ে এক কিলোমিটার হামাগুড়ি দেওয়ানো হয় তাঁদের। এরপর ঘাস ও নর্দমার জল খেতে বাধ্য করা হয়। এই অত্যাচারের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। যদিও ভিডিওর সত্যতা স্বীকার করেনি ‘এখন খবর’।
ইতিমধ্যেই পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, ওই অবস্থায় কোনওমতে হামলাকারীদের হাত ছাড়িয়ে থানায় উপস্থিত হন তাঁরা। জানান, ওই গরু পাচারের উদ্দেশে নিয়ে যাননি তারা। বিয়ে বাড়িতে উপহার দেওয়ার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। নির্যাতিতদের অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তল্লাশি শুরু হয়েছে বাকিদের খোঁজে।
উল্লেখ্য, এমন ঘটনা ওড়িশায় নতুন নয়। এর আগে অন্য জাতে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার অপরাধে জোর করে একই পরিবারের ৪০ জনের মাথা ‘ন্যাড়া’ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল ‘ডবল ইঞ্জিন’ ওড়িশায়। বিয়ে দেওয়ার পর থেকে ওই পরিবারের সদস্যদের একঘরে করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওড়িশার রায়গড় জেলার কাশীপুর ব্লকের বৈগানাগুড়া গ্রামের এই ঘটনা সামনে আসার পর থেকেই দেশজুড়ে উঠেছিল নিন্দার ঝড়। ওড়িশায় বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বেড়েছে এহেন জাতিবিদ্বেষী ঘটনা। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে সে রাজ্যের সরকার।