ডায়মন্ড হারবার: বাঙালির পাতে মাছ থাকবে না! তাও কি সম্ভব! ইলিশ, পমফ্রেট ইত্যাদি সামুদ্রিক মাছে চাহিদা বাঙালির নিত্যদিনে প্রচুর৷ তবে মাছেভাতে বাঙালির জন্য এবার দু:খের খবর। বাজারে আকাল ইলিশ সহ সামুদ্রিক অন্যান্য মাছের। সামুদ্রিক মাছের বংশবৃদ্ধিতে প্রতি বছরের মতো এবারও লাগু হয়ে গিয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা।(Fishing Ban) ফলে বাজারগুলিতে দেখা নেই কোনও সামুদ্রিক মাছের।
বিক্রেতারা জানান, এবার স্টোরের ইলিশও নেই। নেই কোনও সামুদ্রিক মাছই। এই দুই মাস হল ইলিশ এবং অন্যান্য মাছের প্রজননকাল। ফলে সামুদ্রিক মাছের বংশবৃদ্ধির জন্য জারি হয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা।(Fishing Ban) ফলে বাঙালির পাতে মাছের দেখা পাওয়া এখন একটু জটিল। সামুদ্রিক মৎস্যপ্রিয় বাঙালির কাছে সময়টি কিন্তু মোটেই সুখকর নয়।
Read More: গানে গানে বিশেষ সংবর্ধনা সেনার তিন বাহিনীকে, আইপিএল ফাইনাল ঘিরে তুঙ্গে প্রস্তুতি
১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সমুদ্র ও নদীতে মাছ ধরা নিষেধ। মাছের বংশবৃদ্ধি ঘটাতেই এই সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে কয়েক বছর ধরেই। সমুদ্র থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন ঘাটে বর্তমানে নোঙর করে রয়েছে প্রায় সাড়ে তিনহাজার ট্রলার। ঘাটে ঘাটে বাঁধা মৎস্যজীবীদের আরও ৮ হাজার নৌকা ও ভুটভুটি।
পাইকারি বাজারের এক মাছবিক্রেতার কথায়, নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা চলার প্রথমদিকে হিমঘরে থাকা সামুদ্রিক মাছ ক্রেতাদের চাহিদা কিছুটা পূরণ করেছে। কিন্তু, এখন চাহিদা থাকলেও জোগান একেবারেই নেই। মাছের বাজার সামুদ্রিক মাছশূন্য। নদীর মাছ হাতে গোনা যা পাওয়া যাচ্ছে সেই মাছের দামও বেশ চড়া। হিমঘর ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় সামুদ্রিক মাছের আকাল পাইকারি বাজারগুলিতেও।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1929819173435142635
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘‘ইলিশ-সহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের এই সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। মাছের প্রজননকালে সরকারি এই নির্দেশিকা নিঃসন্দেহে যথার্থ। তবে গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীরা মাছ না ধরলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হুগলি, মুড়িগঙ্গা, মাতলা, রায়মঙ্গল, মনি ও কলস নদীতে ছোট নৌকা ও ভুটভুটি নিয়ে অবাধে চলছে মাছ ধরা। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। প্রশাসন ও মৎস্যদপ্তরের এবিষয়ে কড়া নজর রাখা জরুরি।’’
পাশাপাশি, এই দুমাস বেআইনিভাবে নদীতে মাছ ধরা মৎস্যজীবীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও জোরালো দাবি জানান তিনি। তাঁর অভিযোগ, সামুদ্রিক মাছ নদীতে ডিম পাড়তে এসে মৎস্যজীবীদের জালে বন্দি হয়ে যাচ্ছে। ফলে যে উদ্দেশ্যে সরকারি এই নিষেধাজ্ঞা, সেই উদ্দেশ্যই বিফলে যাচ্ছে।
বিজন মাইতি আরও জানান, ‘‘আসলে নদীতেই মাছের সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। কারণ এই দু’মাস সময়ের মধ্যেই জোয়ার ও ভাটার টানে ইলিশ-সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ মোহনায় ঢুকে নদীর মিষ্টি জলে ডিম পাড়তে আসে। সেই নদীতেই যদি মাছ ধরা বন্ধ না করা যায় তাহলে আর কী লাভ!’’