প্রতিবেদন : ফের বিতর্কের কেন্দ্রে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ কোটির অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আরও বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতে পারে, এমনটাও জানা গিয়েছিল। এহেন পরিস্থিতিতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করেছে মার্কিন প্রশাসনের একাধিক দফতরের বিরুদ্ধে।
বস্টনের ফেডেরাল আদালতে মামলা দায়ের করে সোমবার হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার জানান, “সরকারের বেআইনি দাবি মানতে চায়নি হার্ভার্ড। তাই সরকার বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে গত সপ্তাহে। সেই কারণেই মামলা দায়ের করা হয়েছে সরকারের বিরুদ্ধে। কারণ এভাবে অনুদান বন্ধ করা বেআইনি। সরকারের এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ারও নেই।” জানা গিয়েছে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিচার, শক্তির মতো একাধিক দফতরের নাম রয়েছে হার্ভার্ডের আবেদনে। গারবারের স্পষ্ট কথা, সরকারের চাপের মুখে কোনওমতেই নত হবে না হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
সাম্প্রতিক সময়ে প্যালেস্টাইনে হামলার প্রতিবাদে আমেরিকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইজরায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আর তাতেই ভারী গোঁসা হয়েছে ইজরায়েল-বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ইহুদী বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে প্রশাসন বেশ কিছু কঠোর নির্দেশ জারি করে। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দশ দফা নির্দেশনামা পাঠানো হয়। যা পত্রপাঠ খারিজ করেছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই ধরনের সরকারি হস্তক্ষেপ তারা মানতে নারাজ। তারপরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ কোটির অনুদান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষা দফতরের তরফে নোটিশ দিয়ে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে বহু বিজ্ঞানী ও গবেষককে।
প্রসঙ্গত, মার্কিন নিয়ম অনুযায়ী বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ‘কর ছাড়’ দেওয়া হয়। মূলত জনস্বার্থে কাজ করা প্রতিষ্ঠানই এই বিশেষ তকমা পায়। এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে আয়কর দিতে হয় না। এবার হার্ভার্ডের ক্ষেত্রে তা বন্ধও করা হতে পারে। সেই সঙ্গে ঐতিহ্যশালী বিশ্ববিদ্যালয়কে কেবল রাজনৈতিক সংগঠন বলে বিবেচনা করে হার্ভার্ডের উপর নতুন করে কর বসানো হতে পারে। একই সঙ্গে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতি হারাতে পারে বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। অনেক পড়ুয়াকে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় নতিস্বীকারে নারাজ।