প্রতিবেদন : ফের বিতর্কের কেন্দ্রে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। এর আগে ওয়াকফ সংশোধনী আইন বিতর্কে সুপ্রিম কোর্ট ও প্রধান বিচারপতিকে আক্রমণ করেছিলেন তিনি। এবার একই ইস্যুতে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার এসওয়াই কুরেশিকে ‘মুসলিম কমিশনার’ বলে বসলেন তিনি! ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে একজন শীর্ষপদাধিকারীকে জাতপাত তুলে এহেন আক্রমণকে নজিরবিহীন বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
দেশের ১৭তম মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার ছিলেন কুরেশি। বিগত ২০১০ থেকে ২০১২ সাল অবধি ছিল তাঁর কার্যকাল। সম্প্রতি তিনি ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় এক্স হ্যন্ডেলে একটি পোস্ট করেন। সেখানে লেখেন, “ওয়াকফ আইন নিঃসন্দেহে মুসলিমদের জমি দখলের জন্য সরকারের একটি অশুভ পরিকল্পনা। আমি নিশ্চিত যে সুপ্রিম কোর্ট এর বিরুদ্ধেই রায় দেবে। দুষ্ট প্রচার যন্ত্রের ভুল তথ্য তার কাজটি ভালোভাবেই করেছে।”
আর এই মন্তব্যেই বেজায় খাপ্পা দুবে। বিজেপি সাংসদের মন্তব্য, কুরেশি একজন “নির্বাচন কমিশনার নয়, বরং একজন মুসলিম কমিশনার।” তিনি দাবি করেন, ঝাড়খণ্ডে সাঁওতাল পরগনায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা নাকি কুরেশির আমলেই সব থেকে বেশি ভোটার আইকার্ড পেয়েছিল। এছাড়াও এক্স হ্যান্ডলে তিনি দাবি করেছেন, “৭১২ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ইসলাম এসেছে। এই (ভারত) ভূমি হিন্দু, আদিবাসী, জৈন, বৌদ্ধদের বিশ্বাসের স্থান। ১১৮৯ খ্রিস্টাব্দে আমার গ্রাম বিক্রমশিলাকে পুড়িয়ে দিয়েছিল বখতিয়ার খিলজি। অথচ বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছিল তার প্রথম উপাচার্য অতীশ দীপঙ্করকে। ইতিহাস পড়ুন। পাকিস্তান তৈরির সময় বিভাজন তৈরি হয়েছে। নতুন করে বিভাজন চাই না।”
ওয়াকফ আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে নিশানা করে দুবে বলেন, গোড্ডার বিজেপি সাংসদ প্রশ্ন তোলেন, “যদি আইন তৈরি করা সুপ্রিম কোর্টের কাজ হয় তাহলে সংসদ বন্ধ করে দিন। আপনাদের নিয়োগ করেছেন যাঁরা, আপনারা তাঁদের কী ভাবে নির্দেশ দিতে পারেন? আপনারা দেশকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যেতে চান। এই দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধলে জন্য দায়ী থাকবেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না।” এহেন বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর দেশজুড়ে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে নিশিকান্তের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের কাছে কঠোর আইনি পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি।