কোটা : ছেলের বদলে তার বাবার অস্ত্রোপচার করে বসলেন চিকিৎসকরা! শুনতে অবাক হলেও সত্যিই। ঘটনাটি ঘটেছে বিজেপিশাসিত রাজস্থানের কোটা মেডিক্যাল কলেজে। ভুল চিকিৎসার অভিযোগে কাঠগড়ায় সে রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থা।
জানা গিয়েছে, মণীশ নামে এক যুবক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তিনি বাবাকে ফোন করে হাসপাতালে ডাকেন। অস্ত্রোপচারের সময় ওটি পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে ছিলেন বাবা। এরপর ওটির বাইরে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। মণীশের বাবা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। এরপরে তিনি বাবার কাছ থেকে জানতে পারেন যে, চিকিৎসকেরা তাঁকে ওটির ভিতরে ডেকেছিলেন। কিন্তু তারপর কী হয়েছে, কিছুই মনে নেই তাঁর।
মণীশ জানিয়েছেন, তাঁর বাবার শরীরে কাটার দাগ ও কয়েকটি সেলাই দেখে তার সন্দেহ হয়। বাবার শরীরে কাটাছেঁড়ার দাগ কীভাবে এল, সেটা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন করলে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, হাসপাতালে সুপারকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে কিনা খতিয়ে দেখার জন্য গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটি।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, একটা হাসপাতালে যখন অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা রয়েছেন, সেখানে এমন ঘটনা কীভাবে ঘটে? চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগের ফলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাকি রোগীদের মনে। সূত্রের খবর, ভুল পরিচয়ের ফলেই এমন ঘটনা ঘটেছে। কার্ডিওথোরাসিক এবং ভাস্কুলার সার্জারি বিভাগে জগদীশ নামে একজন রোগীর ডায়ালাইসিস ফিস্টুলার অস্ত্রোপচারের কথা ছিল। এদিকে মণীশের বাবার নামও জগদীশ। রোগী যখন অটোতে ছিলেন, তখন ওটি কর্মীরা জগদীশের নাম ধরে ডাকেন আর মণীশের বাবা হাত তোলেন। কিন্তু পরিচয় যাচাই না করেই তাঁকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হল কেন? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।চিকিৎসকরা মণীশের বাবাকে অ্যানেস্থেশিয়া দিয়ে অস্ত্রোপচারের প্রাথমিক প্রক্রিয়ার পরে বুঝতে পারেন, যে কোনও ভুল হয়েছে। অতঃপর নিজেদের দোষ ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি ক্ষত সেলাই করে জগদীশকে মণীশের ওয়ার্ডের কাছে রেখে যান তাঁরা। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই নিন্দার ঝড় উঠেছে একাধিক মহলে।