কলকাতা : শীর্ষ আদালতের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকেও একই বার্তা দিলেন তিনি। বললেন, ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের জন্য ফের আইনি লড়াই করবে রাজ্য। কোন পথে এগোবে লড়াই, এদিন তার ‘নীল নকশা’ বাতলে দিলেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, “যাঁরা এতদিন কাজ করতেন, তাঁরা কী করবেন? নতুন পরীক্ষা নিতে বলেছেন, আগে জানতে চাই, যাঁরা শিক্ষক ছিলেন এতদিন, তাঁদের জন্য কী ব্যাখ্যা? স্কুল কে চালাবে?” বলেন, সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া ব্যাখ্যা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করবে রাজ্য সরকার। “যখন কেউ পথ হারায়, পথের মধ্যে পথ খুঁজে নিতে হয়। ভাঙা রাস্তা পেরিয়ে পথ খুঁজে নিতে হয়। এ, বি বাতিল হলে সি রেডি, ডি রেডি, ই রেডি রাখতে হয়”, জানান তিনি।
মমতার কথায়, “আদালতের কাছে আমরা ব্যাখ্যা চাইব। নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার আগে আমাদের জানতে হবে, যাঁরা স্কুলে পড়াতেন, তাঁদের জন্য আদালতের ব্যাখ্যা কী? স্কুল কে চালাবেন? বাকি কাজ কে চালাবেন? কাউকে না খাইয়ে মারার অধিকার তো কারও নেই। চাকরি দিতে পারবেন না, আমার অনুরোধ তাঁরা যেন চাকরি কেড়ে না নেন। শিক্ষা দফতর যা করার করবে।” তাঁর সংযোজন, “আমরা দু’মাসের মধ্যেই বিকল্প ব্যবস্থা করে দেব। যোগ্যদের কারও চাকরি বাতিল হবে না। মানবিকতার খাতিরে সুপ্রিম কোর্ট আমাদের হাতে যোগ্য-অযোগ্যের তালিকা তুলে দিক। ব্যাখ্যা দিক। শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার অধিকার কারও নেই।” অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, কপিল সিব্বল, রাকেশ দ্বিবেদী, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত ভূষণ রাজ্য সরকারের হয়ে যোগ্যদের সমর্থনে আইনি লড়াই চালাবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি, চাকরিহারাদের উদ্দেশে মমতার বার্তা, “স্কুলে যান। কে বারণ করেছে? সার্ভিস ব্রেক হবে না। ২ মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সব কিছু করব। আপনাদের কারও কাছে ভিক্ষা করে খেতে হবে না। পড়াশোনা করুন। বাচ্চাদের মানুষ করুন। ভলান্টিয়ারিলি সার্ভিস দিন। আমরা চাই আইন আপনাদের সুরাহা করুক। কারও উসকানি, প্ররোচনা শুনে প্ররোচিত হবেন না। মনে রাখবেন।” তবে স্বেচ্ছাশ্রম নিয়ে চাকরিহারারা প্রশ্ন তোলেন। জানতে চান, বেতন পাওয়া যাবে কিনা। সেক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কথা উল্লেখ করে তাঁদেরকে আশ্বস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। “২ মাস কষ্ট করুন, ২০ বছর নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন”, জানিয়েছেন তিনি।