কলকাতা : বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন রাজ্যের ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীর। এদিন দুপুরেই নবান্নে বিশেষ বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।(Mamata Banerjee)ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু-সহ শিক্ষাদফতরের বিশেষ আধিকারিকরা। এরপর সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বলেন, “বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান আছে। সমস্ত বিচারপতির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। আমরা প্রত্যেককে সম্মান করি।” পাশাপাশি জানালেন, তিন মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ করা হবে নিয়োগ প্রক্রিয়া।
Read More: রামনবমীর শোভাযাত্রার আকাশপথে নজরদারি, ড্রোনের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী পুলিশ
মুখ্যমন্ত্রীর(Mamata Banerjee)কথায়, “ওরা বলেছে তিন মাসের মধ্যে প্রসেস করতে, আমরা তা করে দেব। শিক্ষামন্ত্রীকে ইতিমধ্যে বলেছি, এসএসসিকে আমাদের ভাবনা জানাতে। এসএসসি স্বশাসিত সংস্থা। ওরা যেমন ভাল বুঝবে, নিজেদের মতো করে করবে। তবে আমরা চাই এটা তাড়াতাড়ি হয়ে যাক।” তাঁর প্রশ্ন, “যাঁদের বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১১৬১০ জন নবম-দশম শ্রেণিতে পড়াতেন। ৫৫৯৬ জন একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াতেন। বাকিরা অন্য ক্লাসে। আপনারা জানেন, নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। এটি উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার ‘গেটওয়ে’। তাঁদের মধ্যে অনেকে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের খাতা দেখছেন। যদি তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া হয়, ২৬ হাজারের চাকরি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে স্কুল পড়াবে কে?”
শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের আশ্বাস দিতে ভোলেননি মমতা। বলেন, “যখন বিপদে মানুষের পাশ থেকে সবাই পালিয়ে যায়, তখন কেউ না কেউ আসে তাঁকে রক্ষা করার জন্য।” তাঁর কথায়, “আমি শুনেছি শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেকে ডিপ্রেস্ড। ডিপ্রেসনে চলে যাচ্ছেন অনেকে। আমরা চাই না একটাও দুর্ঘটনা ঘটুক। তাই পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়েছি মানবিকতার স্বার্থে। যাদের চাকরি গিয়েছে, তারা বিচার পাওয়ার জন্য ডিপ্রাইভড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করেছেন। তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করেছেন, সবাই একত্রিত হতে চান। তাঁরা অনুরোধ করেছেন, শিক্ষামন্ত্রী-সহ আমি যদি তাঁদের সভায় উপস্থিত থাকি, তাঁরা খুশি হবেন।” মমতা জানান, “যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের পাশে আমরা ছিলাম, আছি এবং থাকব।”
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1907745589950837018?s=19
পাশাপাশি, কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপিকে অভিযোগে বিদ্ধ করে মমতার সাফ বক্তব্য, “শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধসিয়ে দেওয়াই বিজেপির লক্ষ্য।” এর বিরুদ্ধে আইনি পথে লড়াই হবে বলে জানান তিনি। আদালতের রায় প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা জানি, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। এই রায়কে আমরা ইতিবাচক ভাবে নিচ্ছি। আমাদের ইচ্ছা আছে, আমরা ইতিবাচক ভাবে পদক্ষেপ করব।”
প্রসঙ্গত, আগামী ৭ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে চাকরিহারা শিক্ষকদের কথা শুনতে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের উদ্দেশ্যে মমতার বার্তা, “ধৈর্য্য হারাবেন না। মানসিক চাপ নেবেন না। যখন প্রক্রিয়া হবে, আদালত তো আপনাদের সকলকে আবেদন করতে বলেছে। আপনারা আবেদন করুন।” সিপিএম-বিজেপিকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি তিনি “এই পরিবারগুলি অচল হয়ে গেলে বিজেপি-সিপিএমও সচল থাকবে না। কোনও ঘটনা ঘটলে, দায়িত্ব আপনাদের হবে”, স্পষ্ট জানান মমতা।