লন্ডন : বিলেতের মাটিতেও বেজে উঠল বাংলায় জয়গান। বঙ্গ কেন ভারতসেরা, অক্সফোর্ডের মঞ্চ থেকেই তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে তা বুঝিয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, ভারত-ব্রিটেনের পুরনো সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বাংলার উন্নয়নের ছবি তুলে ধরলেন বিশ্ববাসীর কাছে। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, প্রান্তিক মানুষকে তুলে আনাই তাঁর সরকারের মূল লক্ষ্য। মমতার বার্তা, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মানবিকতা দিয়ে মানুষের মন জয় করতে হবে, কাজ করতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে।
বৃহস্পতিবার নিজের বক্তব্যে শিক্ষার প্রসঙ্গ টেনে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু স্কলারশিপের কথা বললেন মমতা। জানালেন, “আমাদের ছাত্ররা মেধাবী, বিশ্বজুড়ে ভারতীয় ছাত্ররা ছড়িয়ে রয়েছেন। ছাত্ররাই ভবিষ্যৎ।” তাঁর সরকারের আমলেই বিনামূল্যে শিক্ষা তৃণমূল স্তরে মানুষকে শিক্ষিত করতে সক্ষম হয়েছে। স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত উচ্চশিক্ষায় ঋণ পাওয়ার সুবিধা রয়েছে। বাংলার ঘরে ঘরে মেয়েদের স্কলারশিপ ড্রপ-আউটকে শূন্যয় নিয়ে এসেছে ‘কন্যাশ্রী’।
স্বাস্থ্যোন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, বর্তমানে হাসপাতালে প্রসবের পরিসংখ্যান ৯৯ শতাংশ। মিল্ক ব্যাঙ্ক বাংলার শিশুমৃত্যুর হারকে শূন্যতে নামিয়ে এনেছে। বিনামূল্যে রেশন বাংলার মানুষের অধিকার। বাংলায় এখন একটিও মানুষ অনাহারে থাকেন না। কৃষকরাই হলেন বাংলার মানুষের মেরুদণ্ড। তাঁদের শুধু টাকা দেওয়া হয়, তাই নয়, পেনশনেরও ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। বাংলার ঘরে ঘরে মহিলাদের হাতকে পূর্ণ করেছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। আত্মবিশ্বাস বেড়েছে প্রত্যেকের। অন্য রাজ্যগুলিও এই প্রকল্পকে অনুকরণ করতে শুরু করেছে। অর্থনীতির ক্ষেত্রে যা ইতিবাচক লক্ষণ।
পাশাপাশি, বাংলার মানুষকে বিনা অর্থে বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যসাথী দিচ্ছে রাজ্য। দেশের আর কোনও রাজ্যে এই সুবিধা নেই। আর দেশের মধ্যে বাংলার লগ্নির পরিমাণের কথা বলতে গিয়ে বলেন, ১৯ লক্ষ কোটি টাকার প্রস্তাব এসেছে। যার মধ্যে ১৪ লক্ষ কোটি টাকার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
মমতা স্পষ্টতই বুঝিয়েছেন, সামাজিক কোন দর্শনে বাংলা ভারতের মধ্যে সেরা। জানান, বাংলায় রয়েছে ৯৭টি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প। মমতার কথা, চেয়ারে বসলে সকলের জন্য কাজ করতে হবে। রাজ্য সরকার এই স্থির লক্ষ্যে উন্নয়নের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। কলকাতায় অক্সফোর্ডের একটি ক্যাম্পাস স্থাপনের আর্জিও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তাঁর বক্তব্যে উঠে এসেছে তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ও লড়াইয়ের ইতিবৃত্তও।