চেন্নাই: এবার হিন্দি আগ্রাসনের বিরোধিতায় সোচ্চার হলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর পুত্র উদয়নিধি স্ট্যালিন। এখনই সতর্ক না হলে তামিল ভাষাকে ধ্বংস করে দেবে হিন্দি, এমনই দাবি করেছেন তিনি। দেশের বহু আঞ্চলিক ভাষাকে গ্রাস করে নিচ্ছে হিন্দি ভাষা। এহেন অভিযোগ তুললেন তামিলনাড়ুর উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিন।
তামিলনাড়ুর ডিএমকে এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের মধ্যে ‘তিন-ভাষা নীতি’ এবং হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার প্রশ্নে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। বুধবার হিন্দি ভাষার বিরুদ্ধে সরব হয়ে উদয়নিধি বলেন, “হিন্দি ভাষা উত্তরের রাজ্যগুলির একাধিক স্থানীয় ভাষাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। রাজস্থানি, হরিয়ানভি, ভোজপুরি-সহ আরও একাধিক ভাষাকে শেষ করে সেখানকার স্থানীয় ভাষা হয়ে উঠেছে হিন্দি। যদি তামিলনাড়ুতে এই ভাষা লাগু করা হয় তাহলে তামিল ভাষাকেও ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে এরা।”
উদয়নিধি স্ট্যালিন আরও বলেন, “বিদেশ ও ইসরোর মতো প্রতিষ্ঠানে কাজ করা ৯০ শতাংশ তামিল এমন স্কুল থেকে এসেছে যেখানে হিন্দি পড়ানো হয় না। গত ১০০ বছর ধরে শিক্ষা বঞ্চনা ও হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুতে সবচেয়ে বেশি আন্দোলন হয়েছে। থলমুথু, নটরাজন, কিঝপালুর, চিন্নাস্বামীর মতো ব্যক্তিরা রাজনীতি নয় তামিল ভাষার জন্য নিজের প্রাণ দিয়েছেন। আজও আমাদের মাতৃভাষার জন্য প্রাণ দিতে হাজার হাজার মানুষ প্রস্তুত।” এই মর্মে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্য প্রস্তুত রয়েছে ‘ভাষার যুদ্ধ’-এর জন্য।

এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি তাঁর বাবা ও মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের পাশে দাঁড়ান। এম কে স্ট্যালিন আগে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। ধর্মেন্দ্র প্রধান বলেছিলেন, তামিলনাড়ু যদি জাতীয় শিক্ষা নীতি (এনইপি) পুরোপুরি গ্রহণ না করে, তাহলে কেন্দ্রীয় শিক্ষার জন্য বরাদ্দ ২,৪০০ কোটি টাকা বন্ধ করা হবে।
তামিলনাড়ু ঐতিহাসিকভাবেই দুই ভাষার নীতি মেনে চলে, যেখানে স্কুলে শুধুমাত্র তামিল এবং ইংরেজি শেখানো হয়। ১৯৩০ এবং ১৯৬০-এর দশকে রাজ্যে হিন্দি-বিরোধী আন্দোলন প্রবলভাবে শুরু হয়েছিল। উদয়নিধি স্ট্যালিন মনে করিয়ে দেন, “আমরা কেবল আমাদের প্রাপ্য অর্থই চাইছি, যা কর থেকে প্রাপ্ত। আমরা ভিক্ষা করছি না। প্রধান বলেছেন যে রাজ্যের শিক্ষায় বরাদ্দ বন্ধ করা হবে যদি আমরা হিন্দি গ্রহণ না করি। কিন্তু আমরা আমাদের অধিকারই চাইছি।”
তিনি আরও বলেন, “ধর্মেন্দ্র প্রধান জিজ্ঞাসা করেছেন, কেন তামিলনাড়ু একমাত্র রাজ্য যারা তিন-ভাষা নীতির বিরোধিতা করছে। কারণ আমরা জানি যে হিন্দি গ্রহণ করলে মাতৃভাষা হারিয়ে যাবে, যেমনটা অন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে হয়েছে। আমরা তা হতে দেব না।”