ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলে সেই বিপুল অঙ্কের অর্থ দিয়ে ভোটকে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে। মোদী সরকার অবশ্য দাবি করেছিল, ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থাকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছ হিসেবে পর্যবসিত করার লক্ষ্যেই নাকি নির্বাচনী বন্ড ব্যবস্থার প্রবর্তন! কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, ওই বন্ড আদতে ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার থেকে টাকা আদায়ের একটি কৌশল ছাড়া কিছুই নয়! বিজেপি ক্ষমতাসীন দল হওয়ায় দেশের সব রাজ্য থেকে সবথেকে বেশি বন্ড ইস্যু হয়েছে বিজেপির নামেই।
বিগত ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট মোদী সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকেও সাফ জানিয়ে দিয়েছিল, ইলেক্টোরাল বন্ড নামক এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, আর কোনও বন্ড ইস্যু করা যাবে না। ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়সীমায় বন্ড বাবদ সর্বাধিক আয় কিন্তু হয়েছে বিজেপিরই। যার অঙ্ক ৬ হাজার ৬০ কোটি টাকা! সেই কারণেই কি সুপ্রিম নির্দেশ সত্ত্বেও ঘুরপথে আইনের মাধ্যমে বন্ড ফেরাতে চাইছে সরকার? উঠছে প্রশ্ন। সদ্য সংসদে পেশ হওয়া নতুন আয়কর আইনের ৮ নম্বর ধারায় নির্বাচনী বন্ডের উল্লেখ ও রাজনৈতিক পার্টিকে চাঁদা সংক্রান্ত বিধির বিবরণ থাকায় এই জল্পনা তৈরি হয়েছে।
একাধিক মহলের বক্তব্য অনুযায়ী, নতুন আয়কর আইনে কমবেশি পুরনো আইনের প্রাসঙ্গিক প্রতিটি ধারা ও বিধিই রয়েছে। শুধুমাত্র যে ধারা ও বিধির প্রাসঙ্গিকতা বিলুপ্ত, সেগুলি মুছে দিয়ে আরও সরল একটি রূপ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আয়কর আইনের অন্তর্ভুক্ত যে ধারায় নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত বিষয়টি ছিল, সেটা রয়ে গিয়েছে আগের মতোই। শুধুমাত্র যে ধারা ও বিধির প্রাসঙ্গিকতা বিলুপ্ত, সেগুলি মুছে দিয়ে আরও সরল একটি রূপ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আয়কর আইনের অন্তর্ভুক্ত যে ধারায় নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত বিষয়টি ছিল, সেটা অপরিবর্তিত রয়েছে। অনেকেরই, এই ধারা ইচ্ছাকৃতভাবেই রাখা হয়েছে। আগামী দিনে ভিন্ন কোনও পথে চেনা এবং অচেনা কর্পোরেট থেকে অর্থ সংগ্রহের রাস্তা খুলে রাখতে চাইছে বিজেপি।