যুগান্তকারী উদ্যোগের পথে হাঁটতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পৃথিবীর প্রথম ‘কার্বন ক্রেডিট কার্ড’ চালু করতে চলেছে রাজ্য। ব্যক্তিগতভাবে কার্বন ব্যবহার কমানোর লক্ষ্য নিয়েই চালু করা হচ্ছে এই কার্ড। প্রাথমিকভাবে স্কুলগুলোর ইকো ক্লাবের সদস্য ছাত্রদের এই কার্ড দেওয়া হবে। ভারতের জলবায়ু-অর্থায়নের চাহিদা এবং কৌশলগুলির উপর দৃষ্টি রেখে কার্বন ক্রেডিট কার্ডের পরিকল্পনাটি গ্রহণ করা হচ্ছে। সম্প্রতি পরিবেশ দফতরের সচিব অভিনব চন্দ্র কলকাতায় জলবায়ু সংক্রান্ত একটি কর্মসূচিতে একথা জানান। তিনি বলেন, “ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে গণপরিবহণ ব্যবহার, প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার এড়ানো, সাইকেল ব্যবহার, বাজি না পোড়ানো-সহ একাধিক পরিবেশবান্ধব কাজে উৎসাহ বাড়াতেই এই গ্রিন ক্রেডিট কার্ডের পরিকল্পনা নিয়েছে আমাদের সরকার।” এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নে স্কুলগুলোকে বলা হবে, ছাত্ররা কী পরিমাণ কার্বন সাশ্রয় করছে তা রেকর্ড করতে। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা শুধুমাত্র পরিবেশগত কর্মসূচিই নয়, এর উন্নয়নমূলক তাৎপর্য রয়েছে। এ-প্রসঙ্গে পরিবেশ দফতরের পরামর্শদাতা রাজশ্রী রায় বলেন, জলবায়ুর ঝুঁকি কমাতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তার উপর নির্ভর করছে বিশ্বের ভবিষ্যৎ। তাই এই উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য।
প্রসঙ্গত, রাজ্য পরিবেশ বিভাগের চালু করা গ্রিন কার্বন ক্রেডিট কার্ড পরিবেশ সংরক্ষণে সক্রিয়ভাবে অবদান রাখা ব্যক্তিদের পুরস্কৃত করবে। পরিবেশবান্ধব কার্যকলাপে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়ে মানুষ ‘ব্রাউন পয়েন্ট’ অর্জন করতে পারবে এই ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে। ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে গণপরিবহণ ব্যবহার, সাইকেল চালানো, বর্জ্য পুনর্ব্যবহার, প্লাস্টিকের ব্যাগ এড়িয়ে চলা, আতশবাজি ব্যবহারে বিরত থাকার মাধ্যমে সবুজ পরিবেশকে রক্ষা করতে সহায়তা করলেই অর্জন হবে ব্রাউন পয়েন্ট। পরিবেশ দফতরের সচিব অভিনব চন্দ্র জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে প্রধান অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম-সহ বেসরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে পয়েন্ট অর্জন করতে পারবে। প্রতিটি ইকো ক্লাব তার সদস্যদের কার্বন ক্রেডিট ট্র্যাক করবে এবং কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাস পর্যবেক্ষণ করে তা রেকর্ড করে রাখবে। এই উদ্যোগটি রাজ্য জুড়ে আরও বেশি লোকের কাছে প্রসারিত হবে। উল্লেখ্য, উদ্যোগটি ভারতের গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড রেডিনেস প্রোগ্রামের আওতাভুক্ত বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ বলেই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
