ছিল না মাথা গোঁজার নিরাপদ ঠাঁই। গত দশ বছর ধরে দশ বছর ধরে এক চিলতে ছিটেবেড়ার ঘরে মাথা গুঁজে কোনওক্রমে দিন কাটাচ্ছিলেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পারশালিকা গ্রামের অসহায় দম্পতি মানিক ও গীতারানি ঘোষ। ‘বর্ষায় চাল ফুটো হয়ে জল পড়ত। রাত কাটাতে হত প্রতিবেশীদের বাড়িতে। পঞ্চায়েত, ব্লকে ঘুরেও আবাস যোজনায় ঘর পাননি। অবশেষে, ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’-তে আবেদন জানাতেই মুশকিল আসান। জীবনে প্রথম মাথার উপর ছাদ পেতে চলার আনন্দে আত্মহারা বৃদ্ধ দম্পতি বলছেন, “আমাদের কাছে মুখ্যমন্ত্রীই ভগবান। উনিই বিপত্তারণ।” মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে ঘর পাওয়ায় মানিক ঘোষ ও গীতারানি ঘোষকে দেখতে গ্রামে এখন ভিড় করছেন অনেক মানুষ। ঘোষ দম্পতি দুই মেয়ের বিয়ে দিতে তাঁদের চাষের জমির অনেকটাই বেচে দিয়েছেন। সামান্য দেড় বিঘা জমির আয়ে কোনওরকমে সংসার চলে। ছিটেবেড়ার ঘর প্রতি বর্ষায় একটু একটু করে ভেঙে পড়লেও সারানোর সাধ্য ছিল না। গ্রামের মোড়পতলায় সেই আশ্রয়ও মাস দুয়েক আগে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। তারপর থেকে ত্রিপল টাঙিয়ে বাস করতেন তাঁরা।
এদিন আশি ছুঁইছুঁই মানিক ঘোষ বলেন, “তিনবার গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য বদল হয়েছে। প্রত্যেকের কাছে কাতর অনুরোধ করেছি। কেউ কর্ণপাত করেননি। হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম।” মাস দেড়েক আগে মানিকবাবুর স্ত্রী গীতারানি ঘোষ ‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলো’-র নম্বরে ফোন করেন। ঘোষ দম্পতির অবস্থার কথা শুনে নবান্ন থেকে সেদিনই ব্লক প্রশাসনের কাছে অনুসন্ধানের নির্দেশ আসে। আর কোথাও ঘুরতে হয়নি ঘোষ দম্পতিকে। এক মাসের মধ্যে প্রশাসনিক সমস্ত কাজ মেটার পর সপ্তাহ খানেক আগে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকাও ঢোকে। “সরকারের প্রধানকে সরাসরি ফোন করায় সহজেই মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলাম। উনি ভগবান”, জানিয়েছেন গীতারানি দেবী।
