ঘটনার কথা মুছে গেছে প্রায় অনেকের মন থেকেই। খনি দুর্ঘটনার পর কেটে গেছে এক মাস। অবশেষে আটকে পড়া শ্রমিকদের মধ্যে থেকে উদ্ধার হল একজনের মৃতদেহ। বৃহস্পতিবার সকালে খনির প্রায় ১৬০ ফুট গভীরে ওই শ্রমিকের দেহটি দেখতে পান উদ্ধারকারীরা। মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তিয়া পাহাড়ের ওই খনির মূল গহ্বরেই ওই দেহাবশেষটি দেখা যায়। প্রায় ১৬০ ফুট জলের তলায় নৌবাহিনীর দূরনিয়ন্ত্রিত যানের সঙ্গে লাগানো ক্যামেরা ওই মৃতদেহটির ছবি তুলে পাঠায়।
এর আগে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর বেআইনি ওই খনিতে কয়লা উত্তোলনে কাজে নামেন ১৫ জন শ্রমিক। কিন্তু পাশের নদী থেকে জল এসে পড়ায় খনিগহ্বরেই আটকে পড়েন তাঁরা। এরপর প্রায় বেশ কিছুদিন পরে উদ্ধারকার্য জোর কদমে শুরু হয়। শেষপর্যন্ত ঘটনার এক মাস তিনদিনের মাথায় কেবল একজন শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার হল।
ইতিমধ্যে উদ্ধারকার্যে নামানো হয়েছে নৌবাহিনীকে। এছাড়া রয়েছে কোল ইন্ডিয়া, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ওড়িশা দমকল বাহিনী এবং বেসরকারি পাম্প প্রস্তুতকারক সংস্থা কিরলোস্কার সংস্থার কর্মীরা। সবমিলিয়ে প্রায় ২০০ জন রয়েছে উদ্ধারকার্যে। এছাড়া সরকারের তরফ থেকে ন্যাশনাল জিওফিজিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউশন, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন অব হাইড্রোলজি এবং অন্যান্য বেশ কিছু সংস্থাকেও কাজে লাগানো হয়েছে।
ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টও জানিয়ে দিয়েছে ওই খনিতে কোনওভাবেই উদ্ধারকার্য বন্ধ করা যাবে না। হয়ত কেউ প্রাণে বেঁচে থাকতে পারেন। কিন্তু আশা ছাড়া যাবে না। যদিও খনিতে জল একটুও কমেনি। নৌসেনা এবং একটি বেসরকারি সংস্থার রিমোট যানগুলি খোঁজ চালাচ্ছে জলের তলায়। মূল গহ্বর থেকে বেরোনো সুড়ঙ্গগুলির সঠিক অবস্থান জানতে শব্দপ্রবাহ পাঠিয়ে ম্যাপ তৈরির কাজ চলছে।
তবে বাকিদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা যে এখন ক্ষীণ হয়ে এসেছে, তা বলাই বাহুল্য। উদ্ধারকারীদের একাংশের আশঙ্কা, খনির জলে অ্যাসিড থাকায় দেহগুলি গলে যেতে পারে। জানা গেছে, যতদিন না সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে কোনও নির্দেশ দিচ্ছে, তত দিন পর্যন্ত চলবে উদ্ধারকাজ।