মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পরই নেওয়া হল তড়িঘড়ি পদক্ষেপ। গত সোমবার বিধানসভার বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছিলেন, সরকারি কাজে কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। আর তাঁর সেই নির্দেশের পরই কঠোর অবস্থান নিল নবান্ন। ১৫৫ জন ঠিকাদার, ১৯ জন ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ করা হল। সরকারি কাজে অবহেলার জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে নবান্নের পক্ষ থেকে। সেইসঙ্গে প্রায় ১৯ হাজার বেআইনি সংযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এফআইআর করা হয়েছে ৪৪১টি। সোমবার বিধানসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ফের স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, সাধারণ মানুষকে অসুবিধায় ফেলা তিনি রেয়াত করবেন না। হুঁশিয়ারির সুরে তিনি জানিয়েছিলেন, এ ব্যাপারে কেউ কম্প্রোমাইজ করলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকী তার চাকরি পর্যন্ত চলে যেতে পারে। তারপরই তিনি মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। তৎক্ষণাৎ মুখ্যসচিব জানান, ইতিমধ্যেই কর্তব্যে গাফিলতির কারণে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহের কাজে প্রশাসনের একাংশ গাফিলতি করছে বলে অভিযোগ এসেছিল। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে কয়েকজনকে চিহ্নিতও করা হয়। তাদের বিরুদ্ধেই মূলত কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হল। শোকজের চিঠি পাঠানো হয়েছে। যথার্থ কারণ দর্শাতে না পারলে আরও কঠোর হবে সরকার, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সোজা কথা, “মানুষের ভাগে অন্য কাউকে ভাগ বসাতে দেব না। সরকারি সম্পত্তি নিয়ে ব্যক্তিস্বার্থ মেটাতে দেব না। যাঁরা পারফরম্যান্স করছেন না, বা করতে পারছেন না, তাঁদের ব্যাক লিস্টে ফেলুন। সরকারি কর্মচারী হয়ে কম্প্রোমাইজ করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অনেকে পাইপটাকে কেটে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। ফলে গ্রামে জল ঢুকতে পারছে না। সমীক্ষা না করেই তাড়াহুড়ো করে ঠিকাদাররা অনেক জায়গায় পাইপ বসিয়েছেন। ভুল টেন্ডার, ভুল ডিপিআর তৈরি করা হয়েছে। এরই ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়ারদের শো-কজের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন।