জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনলগ্নে আরও একবার রাজ্যবাসীকে ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট জানালেন, এই বাংলায় হিংসা ও ভেদাভেদের কোনও জায়গা নেই। বুধবার পোস্তায় জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “আপনারাও বাংলাকে নিজের মনে করুন। দেখবেন বাংলা আরও সুন্দর হয়ে উঠেছে। আমরা বসন্তের কোকিল নই, ৩৬৫ দিনই আপনারা আমাদের পাশে পাবেন। আর কোকিলরা আসে যায়। মনে রাখবেন, বাংলায় রাজস্থান, বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রচুর মানুষ এসে বসবাস করেন, তাঁরা ব্যবসা করেন। কিন্তু তাঁদের কখনও কোনও অসুবিধে হয়নি। তাঁর কারণ আমরা কখনও কারও ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করি না। আপনি কী খাবেন কী পড়বেন সেটা আপনিই ঠিক করবেন। জাত, ধর্ম নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যাথা নেই। আমরা সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলি। সেজন্যই তো আমাদের বাংলা হল মিনি ইন্ডিয়া।” পাশাপাশি, পোস্তা বাজারের পুজো উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীদের মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেন, “বড়বাজার-জোড়াসাঁকো-পোস্তা এলাকায় কোনও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে আপনারা দমকলকে দোষ দেবেন না। কারণ এই সমস্ত জায়গায় আপনারা প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক জমায়েত করে রেখেছেন। মজুত রয়েছে অনেক দাহ্য পদার্থ। ফলে দমকলের গাড়ি ঢুকতে অসুবিধা হয় ঘিঞ্জি এলাকায়। তাই আপনাদের অনুরোধ করব, প্লাস্টিক রাখবেন না।”
মঞ্চে উপস্থিত কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মাকে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ নির্দেশ, পোস্তার ব্যবসায়ী, কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, এলাকার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক-সহ জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক করা হোক। বড়বাজার-জোড়াসাঁকো-পোস্তা এলাকার আগুন-প্লাস্টিক সংক্রান্ত সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করে একটি বিকল্প রাস্তা বের করার কথা বলেন তিনি। বড়বাজার অঞ্চলে বহু জীর্ণ বাড়ি রয়েছে যেগুলিতে পুরসভা নোটিশ দিয়ে রেখেছে, সেখান থেকে মানুষ বিপদজনক জেনেও সরছেন না। মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাব, “আপনারা নিজেরা আলোচনা করে একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন। সেই পরিকল্পনা মাফিক একটি নতুন বাড়ি তৈরি করে আপনারা তাতে সরে যান। এতে আপনাদের ব্যবসা ও জীবন দুইই সুরক্ষিত হবে। সেই বাড়ি, পাঁচতলার জায়গায় দশতলা হলেও আমার কোনও সমস্যা নেই পুরসভা তার অনুমোদন দিয়ে দেবে।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত মন্ত্রী মলয় ঘটককে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের জায়গা নিয়ে একটি সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সেই সংক্রান্ত বিষয়ে কোর্টেও কেস হয়েছে। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে এই জট কাটানোর নির্দেশ দেন মমতা।