বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর থেকেই বাংলাবাসীর জন্য একাধিক জনমুখী প্রকল্প চালু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালক্রমে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে সেগুলি। এদের মধ্যে অন্যতম হল ‘স্বাস্থ্যসাথী’। ক্রমশই জনসাধারণের ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে এই প্রকল্প। এর মধ্যেই ফের প্রকাশ্যে এল এর সাফল্য। চলতি বছরের প্রথম দশ মাসে (অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ অবধি) পুরুলিয়া জেলার ৩০,৬৫৭ জন রোগী স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের টাকায় চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছেন। কেউ জেলার হাসপাতালে অপারেশন করিয়েছেন, কেউ বাঁকুড়ায়। এমনকী কলকাতায় গিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে অপারেশন করিয়ে এসেছেন এমন রোগীও রয়েছেন। সেপ্টেম্বর মাসে বাঁকুড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অ্যাপেনডিক্স অপারেশন করিয়ে আসা এক রোগীর বাবা বলেন, “বিনা পয়সায় অপারেশন হয়েছে। ওষুধও পেয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর এমন উপকার ভুলব না।”
উল্লেখ্য, প্রত্যন্ত জেলা পুরুলিয়ায় আগে তেমন ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা ছিল না। রাজ্যে ক্ষমতায় তৃণমূল আসার পর এখানে মেডিক্যাল কলেজ হয়েছে। একাধিক সুপার স্পেশিলিটি হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে জেলাসফরে এসে প্রশাসনিক বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলেন। ফলে জেলার ২৩টি বেসরকারি হাসপাতালেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে পরিষেবা দেওয়া শুরু হয়। এগুলির মধ্যে পুরুলিয়া শহর, রঘুনাথপুর এলাকার ১৩টি হাসপাতালে নিয়মিত স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের পরিষেবা পাচ্ছেন মানুষ। শহরের একাধিক বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে রোগী দেখানোর ব্যবস্থা থাকলেও সেগুলিতে রোগী ভর্তি করে রাখা বা অপারেশনের পরিকাঠামো নেই। অথচ সেইসব চিকিৎসাকেন্দ্রে কলকাতা ও রাজ্যের অন্য কয়েকটি জেলা থেকে আগত প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসকেরা রোগী দেখেন। তাঁদের পরামর্শমতো অনেক রোগী বাইরে গিয়ে অপারেশন করান। সেখানেও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা পান তাঁরা। এযাবৎ কেউ পরিষেবা চেয়ে ব্যর্থ হয়েছেন জেলায় এমনটা ঘটেনি।
জেলা প্রশাসনের স্বাস্থ্যসাথী বিভাগ সুত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে এখনও অবধি জেলায় ৪০ কোটি ৮৭ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে পরিষেবা দিতে খরচ করা হয়েছে।
প্রশাসনের এক কর্তা জানান, পুরুলিয়ার প্রায় একশো শতাংশ পরিবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নথিভুক্ত। যাঁদের কার্ডে ত্রুটি আছে, তাঁদেরও পরিষেবা পেতে সমস্যা হচ্ছে না। আবেদন করলেই কার্ডের সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।