ফের দুর্যোগের আবহ ঘনিয়ে এসেছে বাংলায়। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে গভীর নিম্নচাপের। আগামী বৃহস্পতিবার এই নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে চলেছে। ধেয়ে আসছে সাইক্লোন ‘ডানা’। যার জেরে বাংলার উপকূলের জেলাগুলিতে প্রবল ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্য, মঙ্গলবার বিকেলে নবান্ন থেকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৮ জেলায় ২৩ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে স্কুল-কলেজ। বন্ধ থাকবে ফেরি চলাচল। প্রতিমুহূর্তে সতর্ক থাকার নির্দেশ ডিএম, এসপি-দের। নবান্নের পাশাপাশি জেলা স্তরেও করা হবে কন্ট্রোল রুম। ইতিমধ্যেই বিপজ্জনক এলাকার বাসিন্দাদের সরানোর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানালেন তিনি। তোপ দাগতে ভুললেন না ডিভিসিকেও। আন্দামান সাগরে তৈরি ঘূর্ণাবর্ত বঙ্গোপসাগরে এসে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এই গভীর নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে বুধবার প্রবল ঘূ্র্ণিঝড়ের রূপ নেবে। বৃহস্পতিবার সকালে ঘূর্ণিঝড় পৌঁছতে পারে বাংলা ও উড়িষ্যার উপকূলে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে উড়িষ্যার পুরী ও বাংলার সাগরদ্বীপের মাঝে কোনও একটি জায়গায় আছড়ে পড়তে পারে।
আজ নবান্নে এ বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ডিএম-এসপিদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বহু মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদে নিয়ে আসা হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এলাকায় থাকতে, মানুষের সহযোগিতা করতে। পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২৪ তারিখ ল্যান্ডফলের কথা থাকলেও দুর্যোগ যে কোনও সময় ঘনিয়ে আসতে পারে। সেই কথা মাথায় রেখে ২৩ তারিখ থেকে ৩ দিন পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, কলকাতা, পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফেরি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পর্যটকদের সতর্ক করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই উপকূলের জেলাগুলোতে শুরু হয়েছে মাইকিংয়ের মাধ্যমে ঘোষণা। উল্লেখ্য, এদিনের বৈঠক থেকে ডিভিসিকেও একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, তাঁদের জল ছাড়ার কারণেই বারবার সমস্যায় পড়তে হয় বাংলাকে।