আসন্ন উপনির্বাচনের আগে ফের অস্বস্তি বাড়ল বঙ্গ বিজেপির। উত্তর বাংলায় বড়সড় ভাঙন ধরল পদ্মশিবিরে। এবার বিজেপি থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বারলার বোন মেরিনা কুজুর। উল্লেখ্য, আগে বিজেপির একজন পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। রবিবার নাগরাকাটায় বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মেরিনার হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সভাপতি মহুয়া গোপ এবং দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। মেরিনা বলেন, “বিজেপিতে আমি কোনও সহযোগিতা পাইনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কাজ দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি এবং সেজন্যই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” মেরিনা ২০১৮ সালে সুলকাপাড়া এলাকা থেকে বিজেপির টিকিটে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং সহযোগিতার অভাবে তাঁর বিজেপির প্রতি আস্থাভঙ্গ হয়। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি তাঁকে টিকিট দেয়নি, যা মেরিনার ক্ষোভের অন্যতম কারণ। ফলে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর এই পদক্ষেপ জলপাইগুড়ির রাজনৈতিক মহলে স্বাভাবিকভাবেই আলোড়ন তৈরি করেছে।
এদিন মেরিনার তৃণমূলে যোগদানে শাসক দলের নেতারা তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মেরিনা কুজুরের যোগদান আমাদের দলের শক্তিকে আরও বাড়াবে। তিনি একজন দক্ষ নেতা এবং আমরা আশাবাদী যে তিনি আমাদের দলের মূল আদর্শকে ধারণ করে কাজ করবেন।” মহুয়া গোপ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমুখী রাজনীতি এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ দেখেই মেরিনা কুজুরের মতো নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।” মেরিনার পাশাপাশি এদিন সিপিআইএমের একাধিক সদস্যও তৃণমূলে যোগ দেন। চম্পাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য অরবিন্দ গুড়িয়া সহ আরও অনেকেই শাসক দলে নাম লেখান। তাঁরা জানিয়েছেন, তৃণমূলের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মানুষের স্বার্থে কাজ করার জন্যই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্বভাবতই জলপাইগুড়ি জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তি বাড়ল আরও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমুখী কার্যক্রম এবং গ্রামীণ এলাকার মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাবের কারণে অনেকেই তৃণমূলের প্রতি আকৃষ্ট ও আগ্রহী হচ্ছেন বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।