ফের রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে ভোটের তোড়জোড়। আগামী নভেম্বরেই বাংলার ছয় কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে উপনির্বাচন। রবিবার সেই কেন্দ্রগুলির প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করল শাসকদল তৃণমূল। এলাকায় কাজের নিরিখে এবং জনপ্রিয়তার বিচারে প্রার্থী তালিকায় জায়গা দেওয়া হয়েছে ৬ জনকে। যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, সকলেই দলের পুরনো কর্মী। এবং একেবারেই তৃণমূল স্তর থেকে কাজ করে উঠে এসেছেন। রবিবার বিকেলে দলের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, সিতাইয়ের প্রার্থী হলেন সঙ্গীতা রায়। মেদিনীপুরের প্রার্থী হলেন সুজয় হাজরা। উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি এবং হাড়োয়ার প্রার্থী হয়েছেন যথাক্রমে সনৎ দে এবং শেখ রবিউল ইসলাম। বাঁকুড়ার তালড্যাংরা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে দলের দীর্ঘদিনের পুরনো কর্মী এবং ব্লকের নেতা ফাল্গুনী সিংহ রায়কে। দিন ঘোষণার পর থেকেই প্রস্তুতিতে মাঠে নেমে পড়েছে ঘাসফুল-নেতৃত্ব। তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর ছয় কেন্দ্রের প্রার্থীদের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে গুরুদায়িত্ব তাঁদে উপর দিয়েছেন তা যথাযথভাবে তাঁরা পালন করবেন এবং মানুষের পাশে থেকে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাবেন। সোমবার সকাল থেকেই পুরোদমে প্রচারে নেমে পড়ছেন ছয় প্রার্থী। হাটে-বাজারে সভা মিছিল বাদ দিয়েও প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে মানুষের সঙ্গে একান্তে দেখা করবেন প্রার্থীরা। একজন মানুষও যাতে এই প্রক্রিয়ায় বাদ না পড়েন, সুনিশ্চিত করা হবে তা।
পাশাপাশি, মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের উন্নয়ন ও জনসেবামূলক কাজের খতিয়ান, বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা, বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। সাম্প্রতিক ইস্যুতে বামেদের তৃণমূল সরকারকে ছলে-বলে-কৌশলে কালিমালিপ্ত করার যে মরিয়া প্রচেষ্টা, তাও বুঝিয়ে বলা হবে মানুষকে। এলাকা এবং ব্লক ধরে উন্নয়নের তালিকা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় দলমত নির্বিশেষে রাজ্য সরকার যে উন্নয়নের কাজ করেছে তাও তুলে ধরা হবে। সব থেকে বড় কথা, সিতাই, মাদারিহাটের মতো উত্তরবঙ্গের প্রান্তিক এলাকার মানুষদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সংবেদনশীলতার সঙ্গে তাঁদের কথা মাথায় রেখে একাধিক জনমুখী প্রকল্প হাতে নিয়েছেন সেগুলি উল্লেখ করে মানুষের কাছে বিজেপির মিথ্যে প্রতিশ্রুতি এবং তৃণমূলের কথা দিয়ে কথা রাখার যে নজির, তা তুলে ধরা হবে। উল্লেখ্য, বাম জমানায় যেভাবে অবহেলার খাতায় ছিল উত্তরবঙ্গ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পর সেই পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে পুরোপুরি। উত্তরের আটটি জেলার জন্য আলাদা করে উন্নয়ন খাতে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। গত ১৩ বছরে বহুবার মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন উত্তরের জেলাগুলিতে। প্রশাসনিক বৈঠক করে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়নের খোঁজখবর নিয়েছেন, প্রয়োজনে নির্দেশ দিয়েছেন বাকি কাজ শেষ করার। রাস্তা, পানীয় জল, আলো, স্বাস্থ্য, শিক্ষা-সহ মানুষের প্রাথমিক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থাও করেছে রাজ্য। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা সত্ত্বেও মাথার উপর ছাদ, একশো দিনের কাজের টাকা মিটিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই।