ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সিএএ-এনআরসিকে রাজনীতির তাস হিসেবে ব্যবহার করে এসেছে বিজেপি। বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলিতে নিজেদের পায়ের তলার জমি শক্ত করতে বারবার এনআরসি জুজু দেখিয়েছে তারা। এবার ফের সেই কৌশল অবলম্বন করল গেরুয়াশিবির। সোমবার কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান দাবি করেছেন, ঝাড়খন্ডের আসন্ন বিধানসভা ভোটে জিতে ক্ষমতায় এলেই রাজ্যে প্রয়োগ করা হবে এনআরসি৷ সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর দাবি, ঝাড়খন্ডের অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করে রোটি-মাটি ও বেটির সুরক্ষা প্রদানের জন্যই প্রয়োগ করা হবে এনআরসি৷ আসলে হরিয়ানা এবং জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা ভোটে বিজেপির খারাপ ফল হতে পারে, এই আশঙ্কা করা হচ্ছে বুথ ফেরত সমীক্ষায়৷ এই বিষয় থেকে নজর ঘোরানোর জন্যই কি ঝাড়খন্ডের এনআরসি-র প্রসঙ্গ তুললেন শিবরাজ সিং চৌহান, রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে এমনটাই।
স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রীর এই দাবির পরেই সোচ্চার হয়েছে বিরোধীশিবির৷ স্রেফ ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী এমন দাবি করছেন বলে অভিযোগ করেছে তারা। এই প্রসঙ্গেই সরাসরি বিজেপি তথা মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ, আসামের নেত্রী সুস্মিতা দেব৷ তাঁর প্রশ্ন, “আসামে এনআরসি প্রক্রিয়ার নাম করে কি করা হয়েছে? এখনও গোটা প্রক্রিয়া শেষ করা হয়নি, ওদিকে ১৬০০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে৷ শুধু হাওয়ায় হাওয়ায় প্রতিশ্রুতি দেয় বিজেপি৷ অসমের পরে এবার ঝাড়খন্ডের জনতাকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে বিজেপি৷” উল্লেখ্য, এর আগে বাংলার বিধানসভা ভোটের আগেও কয়েকজন বিজেপি নেতা দাবি করেছিলেন বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলেই প্রয়োগ করা হবে এনআরসি৷ বাংলার বিধানসভা ভোটে তৃণমূল-ঝড়ে উড়ে গিয়েছেল বিজেপি৷ ফলত তারপর বাংলায় এনআরসি প্রয়োগের বিষয় থেকে সরে আসে গেরুয়াশিবির। তবে একই ধাঁচে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার হাতে থাকা রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে ফের এনআরসি প্রয়োগের ঘোষণার মাধ্যমে ভোটব্যাঙ্ককে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে তারা, সোমবার এমনই অভিযোগ করেছে বিরোধীমহল।