যোগী আদিত্যনাথের শাসনকালে কার্যত অপরাধী-দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে উত্তরপ্রদেশে। খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, রাহাজানি, হামলা হয়ে উঠেছে প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। সে রাজ্যে আরও একবার প্রকাশ্যে এল অভাবনীয় নারকীয়তা। স্রেফ কুসংস্কারের বশেই খুন হতে হল দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া! পুলিশের ধারণা, স্কুলের উন্নতির আশায় বলি দেওয়া হয়েছে ওই নাবালককে। মূল অভিযুক্ত বেসরকারি স্কুলেরই ডিরেক্টর, তার বাবা এবং তিন শিক্ষক। পাঁচজনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল হাথরাস। যে হাথরাসেরই ভয়াবহ গণধর্ষণের স্মৃতি এখনও দগদগে দেশবাসীর মনে। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, হাথরাসের রাসগাও এলাকায় ডি এল পাবলিক স্কুলের ডিরেক্টর, তাঁর বাবা এবং তিন শিক্ষক ওই স্কুলের উন্নতিকল্পে নাকি এই নরবলির পরিকল্পনা করেন। আসলে ওই বেসরকারি স্কুলটি বেশ কিছুদিন ধরে লোকসানে চলছিল। স্কুলের ডিরেক্টরের বাবা কালোজাদুর চর্চা করে। সেই মূলত নরবলির পরিকল্পনা করে। তার বিশ্বাস ছিল, একটি শিশুকে ঈশ্বরের উদ্দেশে উৎসর্গ করলে নাকি ফিরবে স্কুলের নাম-যশ!
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে একাধিকবার স্কুলের হস্টেল থেকে শিশুকে তুলে এনে বলি দেওয়ার চেষ্টা হয়। প্রথমবার বলি দেওয়ার চেষ্টা হয় ৬ সেপ্টেম্বর। কিন্তু সেবার যে শিশুটিকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সে সতর্ক হয়ে হস্টেল রুমের অ্যালার্ম বাজিয়ে দেয়। ফলত পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। ২২ সেপ্টেম্বর ফের চেষ্টা করা হয় খুনের। পরদিন সকালে নিজের বিছানায় নিথর দেহ পাওয়া যায় শিশুটির। মৃত শিশুর বাবা জানিয়েছেন, তাঁকে হস্টেল থেকে ফোন করে বলা হয়, তাঁদের সন্তান গুরুতর অসুস্থ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সঙ্গে সঙ্গে স্কুলে চলে যান শিশুটির বাবা। জানা যায়, শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শেষে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে শিশুটির বাবা দেখেন, অভিযুক্তদের গাড়িতে তাঁদের সন্তানের দেহ পড়ে আছে। তদন্তে নেমে পুলিশ স্কুল চত্বর থেকে কালোজাদু এবং বলির জিনিসপত্র পায়। জানা যায়, স্কুলের ডিরেক্টরের বাবা তন্ত্রবিদ্যা এবং কালোজাদুর চর্চা করে। তারপরই স্পষ্ট হয় পুরো বিষয়টি।