যোগী আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হবার পর থেকেই বারবার সে রাজ্যে প্রকাশ্য এসেছে ভয় ও সন্ত্রাসের আবহ। ক্রমশ অপরাধের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে যোগীরাজ্য। এবার এক বেআইনি বাজির গুদামে ঘটল ভয়াবহ বিস্ফোরণ৷ প্রাণ গেল এক শিশু-সহ ৪ জনের। গুরুতর জখম আরও অন্তত ৬ জন। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ফিরোজাবাদের নউশেরায়। সোমবার রাতে। বিকট আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। ধসে পড়ে আস্ত একটি বাড়ি৷ ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান অন্তত ১০ জন। আর্তচিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন স্থানীয় মানুষ। পরে নেমে পড়ে পুলিশ এবং দমকল বাহিনী। উদ্ধার করা হয় ১ শিশুসহ ৪ জনের নিষ্প্রাণ দেহ। আহতদের পাঠানো হয় হাসপাতালে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ১০টা নাগাদ ওই বাজির গুদামে কোনও কারণে আগুন লেগে যায়৷ কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো গুদামেই ছড়িয়ে পড়ে আগুনের লেলিহান শিখা৷ প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে ওই গুদামে৷ তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, ধসে পড়ে আশপাশের বাড়িও৷ ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান বহু মানুষ৷
এরপর খবর পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ও দমকল বাহিনী৷ পৌঁছন আগ্রার আইজি দীপক কুমার ও পুলিশের বাকি শীর্ষকর্তারা৷ শুরু হয় উদ্ধারকাজ৷ ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের৷ ৪ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়৷ বাকি ৬ জনের অবস্থাও অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷ মৃতদের মধ্যে ৩ বছরের এক শিশুকন্যা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ বাকিরা হলেন, মীরা দেবী (৫২), গৌতম (১৬) এবং আমান (২৬)৷ ঘটনা প্রসঙ্গে আইজি দীপক কুমার জানান, এলাকার বাইরে বাজির এই গুদাম তৈরির অনুমতি নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই, বে-আইনিভাবে এলাকার একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে রাখা হয়েছিল বিপুল সংখ্যক বাজি৷ ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে৷ দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তি নেওয়া হবে বলে জানান তিনি৷ সাধারণ মানুষ আঙুল তুলেছে যোগী প্রশাসনের দিকেই। কারণ, পুলিশ স্বীকার করেছে, ওই বাড়িটিকে বাজির গুদাম হিসেবে ব্যবহার করার কোনও অনুমতি ছিল না। তা সত্ত্বেও কীভাবে সেখানে চলছিল বেআইনি বাজির গুদাম, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।