আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এবং তিলোত্তমার ধর্ষণ ও খুনের ন্যায়বিচার চেয়ে স্বাস্থ্যভবনের সামনে ধরনায় বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এমতাবস্থায় নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, শনিবার দুপুরে হঠাৎই স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছে গেলেন তিনি। হাতে মাইক তুলে নেন। ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে জানান, “আমি আপনাদের অনুরোধ করতে এসেছি। যদি বলতে দেন খুশি হব। শান্ত হন। আমিও ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছি। আপনাদের মাইকটা কি ঠিক করা যাবে? আমি যখন এসেছি তখন আমি কাজ করব। আমি আপনাদের আন্দোলনকে সমর্থন করি। আমি আপনাদের আন্দোলনকে কুর্নিশ জানাই। আমি ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে আসা লোক। আমি জানি আমার পদটা বড় কথা নয়। কাল সারারাত ঝড়-জল হয়েছে। আপনাদের যেমন কষ্ট হয়েছে, আমারও কষ্ট হয়েছে। এই ঝড়জলের মধ্যে আপনারা যেভাবে বসে আছেন আমারও কষ্ট হয়েছে। রাতের পর রাত আমি ঘুমাইনি। পাহারাদের মতো আমাকেও জেগে থাকতে হয়। আপনারা অনেক কষ্ট পেয়েছেন। আর কষ্ট না করে যদি আপনারা কাজে ফিরতে চান, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আপনাদের দাবিগুলো সহানুভূতির সঙ্গে খতিয়ে দেখব। ভাবব, চিন্তা করব। যদি কেউ দোষী হয়, সে শাস্তি পাবেই।”
পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, “আমি চাই তিলোত্তমার বিচার হোক। ডাক্তারদের কাছে আবেদন জানাব, আমাকে একটু সময় দিন। যদি আপনাদের আমার উপর আস্থা, ভরসা থাকে। আমি মনে করি অনেক মানুষও মারা যাচ্ছে, দয়া করে কাজে যোগদান করুন। আমি বলতে পারি, আপনাদের উপর কোনও অবিচার করব না। হাসপাতালের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ শুরু করে দিয়েছি। রোগীকল্যাণ সমিতিতে অধ্যক্ষদের চেয়ারম্যান করব। তাতে জুনিয়র ডাক্তার, নার্স, পুলিশও থাকবে। সব মেডিক্যাল কলেজে রোগীকল্যাণ সমিতি ভেঙে দিলাম। আপনাদের বাকি যা দাবি আছে, তা ভাবা হবে। দোষীরা কেউ আমার বন্ধু নয়। কোনওভাবে এই খুন, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে সাধ্যমতো ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব। আপনারা আমার ভাইবোন। নিজেদের মধ্যে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিন। আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন, কোনও ডাক্তারদের বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নেব না। আপনারা ছাড়া সিনিয়র ডাক্তাররা অচল। আপনাদের সহযোদ্ধা হিসাবে ধরনা মঞ্চে যেমন আসতে পেরেছি, তেমনই ভরসা রাখলে আস্তে আস্তে সমস্ত দাবি খতিয়ে দেখব। সুপ্রিম কোর্টে কেস চলছে, ১৭ তারিখ শুনানি আছে। আমি চাই না কোনও ব্যবস্থা হোক। আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নয়, বড় দিদির মতো আপনাদের কাছে এসেছি। আমি সমব্যথী, সমসাথী। আমি দাবি মেটানোর চেষ্টা করব। সময় দিন। আপনারা সুবিচার পাবেন। অবিচার হবে না।” এদিন স্বাস্থ্যভবনের সামনে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তার পর আশ্বস্ত হন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আলোচনায় বসতে চান, এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা।