মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশজুড়ে বারবার ফুটে উঠেছে নারীসুরক্ষা ও নারীনিরাপত্তার করুণ চিত্র। বিজেপিশাসিত ‘ডবল ইঞ্জিন’ রাজ্যগুলিতে একের পর এক ঘটে গিয়েছে নারকীয় ঘটনা। এবার প্রকাশ্যে এল নতুন তথ্য। যার পর থেকেই প্রবল অস্বস্তিতে পদ্মশিবির। দেশের ৭৫৫ জন বর্তমান সাংসদ এবং ৩,৯৩৮ জন বিধায়কের মধ্যে ১৫১ জন সাংসদ-বিধায়কের বিরুদ্ধেই নারীনির্যাতনের অপরাধ-সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এই ১৫১ জন বর্তমান সাংসদ-বিধায়কের মধ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ-সংক্রান্ত মামলা রয়েছে ১৬ জন সাংসদ এবং ১৩৫ জন বিধায়কের বিরুদ্ধে। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (এডিআর) এবং ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচের রিপোর্টে এই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। বর্তমান সাংসদ ও বিধায়কদের ৪৮০৯টি নির্বাচনী হলফনামার মধ্যে ৪৬৯৩টি বিশ্লেষণ করে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। আর সেই সূত্রেই দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন দলের নিরিখে অভিযুক্তদের তালিকায় ভারতীয় জনতা পার্টিরই সর্বাধিক সংখ্যক জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। নারীনিগ্রহে অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদ-বিধায়কের সংখ্যা ৫৪।
এরপর রয়েছেন কংগ্রেসের ২৩ এবং তেলুগু দেশম পার্টির ১৭ জন সাংসদ-বিধায়ক, যাঁদের বিরুদ্ধে নারীনির্যাতন সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। ১৫১ জন সাংসদ-বিধায়কের মধ্যে ১৬ জন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ধর্ষণ-সংক্রান্ত মামলা (আইপিসি ধারা-৩৭৬) রয়েছে এবং এদের মধ্যে কারও কারও বিরুদ্ধে একই মহিলাকে বারবার ধর্ষণ করার অভিযোগ আছে। সাংসদ-বিধায়কদের বিরুদ্ধে মহিলাদের নির্যাতনের মামলাগুলি যে যে ধারায় দায়ের করা হয়েছে সেগুলি হল মহিলার উপর হামলা বা অপরাধমূলক বলপ্রয়োগের অভিযোগ তার শালীনতাকে ক্ষুব্ধ করার উদ্দেশ্যে (আইপিসি ধারা-৩৫৪), অপহরণ, নারীকে জোর করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়েতে বাধ্য করা (আইপিসি ধারা-৩৬৬), ধর্ষণ (আইপিসি ধারা-৩৭৬)। উল্লেখ্য, কোনও ব্যক্তি যদি একই মহিলাকে বারবার ধর্ষণ করে তাহলে তাকে একটি মেয়াদের জন্য কঠোর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে যা দশ বছরের কম হবে না, তবে কারাদণ্ড আরও প্রসারিত হতে পারে (আইপিসি ধারা-৩৭৬(২)(এন))। এই জাতীয় অপরাধের পাশাপাশি রয়েছে এমন নির্যাতন যেখানে একজন মহিলা স্বামী বা আত্মীয়ের দ্বারা নিষ্ঠুরতার শিকার (আইপিসি ধারা-৪৯৮এ), পতিতাবৃত্তি-সহ খারাপ উদ্দেশ্যে নাবালক ক্রয় করা (আইপিসি ধারা-৩৭৩) এবং একজন মহিলার শালীনতা অবমাননার উদ্দেশ্যে কুরুচিকর মন্তব্য, অঙ্গভঙ্গি বা কাজ (আইপিসি ধারা-৫০৯)।