Tripura অতিসম্প্রতিই বাংলাদেশের অস্থির ও উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেছিলেন বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তা নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে রাজনৈতিক মহলে। এবার শুভেন্দুর বিরোধিতায় সরব হলেন খোদ ত্রিপুরায় বিজেপির জোটসঙ্গী তিপ্রা মথার প্রধান প্রদ্যোৎকিশোর দেববর্মণ। মঙ্গলবার তাঁর এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে প্রদ্যোৎ সরাসরি শুভেন্দুর কথাকে উস্কানিমূলক বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিপ্রা মথা প্রধানের এই বক্তব্য নিয়ে বিপাকে ত্রিপুরার বিজেপিও। সে কারণেই কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরার বিজেপি নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, শুভেন্দু বিধানসভার বাইরে সোমবার যা বলেছিলেন, তার সারবত্তা ছিল, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের হত্যা করা হচ্ছে। রংপুর, সিরাজগঞ্জের ঘটনার কথা উল্লেখ করে শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, বাংলাদেশের এই সমস্ত জায়গায় নিহতদের বেশির ভাগই হিন্দু সম্প্রদায়ের। পাশাপাশিই শুভেন্দু এও বলেছিলেন, এবার নাকি বাংলাদেশ থেকে পশ্চিম বাংলায় আসবেন এক কোটি হিন্দু!

প্রসঙ্গত, শুভেন্দুর এহেন মন্তব্য একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি ওয়েবসাইটেও প্রকাশিত হয়েছিল। তারই স্ক্রিনশট পোস্ট করে মঙ্গলবার প্রদ্যোৎ লিখেছেন, ‘‘নেতারা যখন এই ধরনের বক্তব্য পেশ করেন, তখন উত্তর-পূর্ব আরও বিপন্ন বোধ করে। বাংলার নেতার এই ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য আমাদের রাজ্যভাগের দাবিকে আরও জোরালো করবে। সংখ্যালঘুদের নিশ্চয়ই নিরাপত্তা দিতে হবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সবাইকে ভারতে আমন্ত্রণ জানিয়ে বাংলাদেশকে আরও একটা পাকিস্তান করে দেওয়া হবে।’’ শুভেন্দুর ওই কথায় কেন তিপ্রা মথার পৃথক রাজ্যের দাবি জোরালো হবে? ‘‘বাংলাদেশ থেকে ভারতে লোক এলে জনজাতি অংশের মানুষ আরও বিপন্ন হবেন। সেই জায়গা থেকেই আমাদের রাজ্যভাগের দাবি জোরালো হবে। এটা তো সহজ বিষয়’’, জানিয়েছেন প্রদ্যোৎ।
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরোধিতা করে নির্বাচনে লড়েছিল মথা। সিপিএমকে সরিয়ে তারাই হয়ে উঠেছিল প্রধান বিরোধী দল। কিন্তু কয়েক মাস আগে সেই মথাই বিজেপির সঙ্গে জোট করেছে। যিনি ছিলেন বিরোধী দলনেতা, সেই অনিমেষ দেববর্মা এখন ত্রিপুরা সরকারেরই মন্ত্রী। প্রদ্যোৎ বলেন, ‘‘আমি আমার কথা বলেছি। আমার লাইন স্পষ্ট। ত্রিপুরায় বোঝাপড়া করেছি মানে এই নয় যে, আমরা আমাদের কথা বলতে পারব না।’’ তবে ত্রিপুরা বিজেপির নেতারা আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রদ্যোতের মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে চাইছেন না। ত্রিপুরা বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এটা আন্তর্জাতিক বিষয়। বাংলাদেশের বিষয়ে আমরা কোনও মন্তব্য করব না। যা বলার ভারত সরকার এবং ত্রিপুরা সরকার বলবে।’’ অন্যদিকে ত্রিপুরা বিজেপির এক প্রবীণ নেতা শুভেন্দুর বক্তব্য নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, বাংলাদেশের সঙ্গে শুধু পশ্চিম বাংলার সীমান্ত নেই। ত্রিপুরারও রয়েছে। সেখানে বাঙালি-জনজাতি সম্পর্ক খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। কাজেই ভেবেচিন্তে মন্তব্য করা উচিত ছিল শুভেন্দুর।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1821188746315956281
tripura