supreme court এবার শীর্ষ আদালতে বড়সড় ধাক্কা গেল উত্তরপ্রদেশের বিজেপিশাসিত সরকার। সম্প্রতি যোগী সরকার ফতোয়া দিয়েছিল যে, কাঁওয়ার যাত্রা পথে সমস্ত খাবার ও অন্যান্য দোকানের বাইরে মালিকের নাম লিখতে হবে। সোমবার, সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের দায়ের করা মামলায় সর্বোচ্চ আদালতের স্পষ্ট বক্তব্য, “দোকান মালিক ও কর্মীদের নাম লিখতে বাধ্য করে বিশেষ কোনও উদ্দেশ্য সাধন হবে না। এই নির্দেশ কার্যকর করা হলে তা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রকে লঙ্ঘন করবে।” উত্তরপ্রদেশের পর উত্তরাখণ্ড সরকারও দোকানের বাইরে মালিক ও কর্মীদের নাম লেখার নির্দেশ দিয়েছিল। মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িনীতেও একই নির্দেশিকা জারি করা হয়। শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, কোনও ক্ষেত্রেই দোকানে মালিকের নাম লেখা বাধ্যতা মূলক নয়। উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড সরকার ও উজ্জয়িনী পুরসভাকে তাদের বক্তব্য জানাতে নোটিশ জারি করেছে আদালত। আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে মহুয়া বলেন, “উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড সরকার অসাংবিধানিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট তাদের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। যা ভারতের আম আদমির জয়। সংবিধানের জয়।” রায়কে সৌহার্দ্যের জয় বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবও।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতিবছর শ্রাবণে দীর্ঘ পথ হেঁটে শিবের মাথায় জল ঢালেন পুণ্যার্থীরা। উত্তর ভারতে যা কাঁওয়ার যাত্রা নামে পরিচিত। উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগর পুলিশ যাত্রাপথে সমস্ত খাদ্য ও অন্যান্য দোকান, পণ্য বিক্রেতাদের নাম লেখার নির্দেশ দেয়। বলা হয়, দোকান মালিকদের নাম লেখা থাকলে ধর্ম চিনতে যাতে সুবিধা হয়, তা এই নির্দেশ। পুলিশ কিছুটা পিছিয়ে এলেও খোদ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘোষণা করেন, কেবল মুজফফরনগর নয়, যেখান যেখান দিয়ে কাঁওয়ার যাত্রা যাবে, সেখানেই নিয়ম মানতে হবে। এনডিএর অন্দরেও বিরোধিতা শুরু হয়। মোদীর জোটসঙ্গী জেডিইউ, আরএলডি ও চিরাগ পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি সমালোচনা করে। এরপর সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। একটি সংগঠন ও আরও দুই ব্যক্তি শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। সোমবার শুনানি চলাকালীন আবেদনকারীদের আইনজীবী অভিষেক সিংভি জানান, রেস্তোরাঁয় মানুষ যান মেনু দেখে, কে খাবার পরিবেশন করছে, তা দেখে নয়। এই নির্দেশ সংবিধানের পরিপন্থী। পুলিশ ও প্রশাসন এমন নির্দেশ দিতে পারে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন করেন সিংভি। শুনানির পর বিচারপতি হৃষিকেশ রায় ও বিচারপতি এস ভি এন ভাট্টির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, জোর করে দোকানের বাইরে দোকানি এবং কর্মীদের নাম লেখানো যাবে না। আদালত আরও জানিয়েছে, কাঁওয়ার যাত্রার সময় পুণ্যার্থীরা যাতে পছন্দের নিরামিষ খাবার পান এবং তা যাতে পরিচ্ছন্নভাবে রান্না করা হয়, তার নিশ্চিত করতে হবে। দোকানে আমিষ না কি নিরামিষড খাবার পাওয়া যাচ্ছে, তা বাইরে লেখা যেতে পারে, এমনই জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1815915860109742142
supreme court