মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির নিরপেক্ষতা। সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময়। আর এবার বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতেও সংশয়ের সম্মুখীন সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা। এতদিন যেটা অ-বিজেপি রাজ্যে প্রয়োগ করা হচ্ছিল, সেটাই এবার প্রয়োগ করা হল বিজেপিশাসিত রাজ্যে। রাজ্যে তদন্তে গেলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে ‘ডবল ইঞ্জিন’ মধ্যপ্রদেশেও। এই ক্ষেত্রে বিরোধী রাজ্যগুলির সঙ্গে নীতিতে মিলে গেল বিজেপিশাসিত রাজ্যের মতও। মধ্যপ্রদেশ সরকার বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, যে সিবিআই সে রাজ্যে তদন্ত শুরু করার আগে রাজ্যের লিখিত সম্মতি প্রয়োজন। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আগামী ১ জুলাই থেকে এই নিয়ম কার্যকর হচ্ছে। অর্থাৎ, ওই সময় থেকে সিবিআইয়ের মামলাগুলির ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম কার্যকর হবে। রাজ্যে কোনও সাধারণ ব্যক্তি সরকারি আধিকারিক বা রাজ্যের কোনও সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য সিবিআইকে এখন মধ্যপ্রদেশ প্রশাসনের কাছ থেকে নিতে হবে লিখিত ছাড়পত্র।
প্রসঙ্গত, দিল্লী স্পেশাল পুলিশ এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্টের ধারা ৬ অনুসারে, সিবিআইকে কোনও রাজ্যে তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সম্মতি নিতে হয়। তবে রাজ্যগুলি সাধারণ সম্মতিপত্র দিয়ে রাখায় প্রতিবার সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু, বাংলা, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, কেরালা এবং তেলেঙ্গানা, বিরোধী রাজ্যগুলি সেই সাধারণ সম্মতিপত্র প্রত্যাহার করে নিয়ে প্রত্যেক ক্ষেত্রে অনুমতি নেওয়ার নিয়ম করেছে। এবার সেই তালিকায় যোগ হল প্রথম কোনও বিজেপিশাসিত রাজ্য। অন্যদিকে, ২০২২ সালের অক্টোবরে মহারাষ্ট্রের তৎকালীন উদ্ধব ঠাকরে সরকার সাধারণ সম্মতি প্রত্যাহার করেছিল। তবে পরবর্তীকালে শিণ্ডে সরকার পুরোনো নিয়ম ফিরিয়ে আনে। উল্লেখ্য, বিরোধীদের তরফে একাধিক বার অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে। মোদী সরকারের আঙুল-ইশারাতেই এজেন্সিগুলি বেছে বেছে টার্গেট করছে বিরোধী নেতা ও নেত্রীদের। যার জেরেই সিবিআইকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয় অবিজেপি রাজ্যগুলি। এবার বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকারের এহেন পদক্ষেপের ঘটনা প্রকাশ্যে এল। ফলত সিবিআইয়ের গ্রহণযোগ্যতা ও নিয়ে প্রশ্ন উঠল পদ্ম-পরিবারের অন্দরেই, এমনই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।