কেটে গিয়েছে প্রায় বছরখানেক। তবুও মেলেনি সুরাহা। বিজেপিশাসিত মণিপুরে এখনও জ্বলছে জাতিদাঙ্গার আগুন। ফের রক্তাক্ত হয়ে উঠল উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারালেন সিআরপিএফের এক জওয়ান। রবিবার মণিপুরের জিবিরাম এলাকায় একটি গাড়িতে চেপে টহল দিচ্ছিলেন সিআরপিএফের জওয়ানরা। সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন পুলিশকর্মীও। আচমকাই বাহিনীর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিরা। পাল্টা গুলি চালান জওয়ানরাও। কিন্তু প্রাণ হারান সিআরপিএফের এক জওয়ান। এরপরেই জঙ্গিদের খোঁজে শুরু হয় চিরুনি-তল্লাশি। নতুন করে এই গুলির লড়াইয়ের ঘটনায় আবার সন্ত্রস্ত হয়ে উঠেছে মণিপুরের পরিবেশ। সবমিলিয়ে মণিপুরের এহেন পরিস্থিতি সেখানকার ডবল ইঞ্জিন সরকারের ব্যর্থতাকেই জানান দিচ্ছে। কিছুদিন আগেই আক্রান্ত হয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। রবিবার মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে ২২০ কিমি দূরে অসমের সীমান্তবর্তী জেলায় জিরিরামে সিআরপিএফ এবং পুলিশের যৌথ টহলদারি চলছিল। সকলেই ছিলেন একটি এসইউভিতে। অতর্কিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি চালায় গাড়ি লক্ষ্য করে। গুলিতে চুরমার হয়ে যায় গাড়ির পিছনের কাচ। জওয়ানরা পাল্টা গুলি চালালে জঙ্গিরা গভীর জঙ্গলে গা ঢাকা দেয়।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই জিরিরামে সংঘর্ষ চলছে উপজাতিদের মধ্যে। গত বছরের মে মাস থেকে উত্তপ্ত মণিপুর। কুকি ও মেইতেই, দুই জনগোষ্ঠীর বিবাদের জেরে সারা রাজ্যেই হিংসার আগুন ছড়িয়েছিল। বছর পার হলেও, তা এখনও নেভেনি। কিছুদিন আগে এই জিরিবামেই এক ব্যক্তির মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের চাঞ্চল্য ছড়ায়। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে ইতিমধ্যেই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ধর্ষণ, খুনের মতো ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার। কেন্দ্রের মোদী সরকারের ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। অভিযোগের আঙুল উঠেছে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দিকে। কোনও বিশেষ উদ্দেশ্যেই কি মণিপুরে বিশৃঙ্খলা জিইয়ে রাখতে চাইছে শাসকদল বিজেপি? রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে এমনটাই।