প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পরেই নরেন্দ্র মোদীর একাধিক অদূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে আমজনতাকে। বিপন্ন হয়েছে দেশের অর্থনীতি। এবার ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চ-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে প্রকাশ্যে চলে এল অর্থনীতির করুণ চিত্র। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রকের ৫ই জুলাই প্রকাশ করা বার্ষিক সমীক্ষার তথ্যের ভিত্তিতে এই রিপোর্টটি তৈরি হয়েছে। রিপোর্টে দেশের অর্থনীতিতে তিনটি বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এক, ২০১৬ সালে মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত। দুই, ২০১৭ সালে জিএসটি চালু। তিন, ২০২০ সালে লকডাউন জারি করার ফলে দেশীয় অর্থনীতি, বিশেষত অসংগঠিত ক্ষেত্রের মেরুদণ্ড ভেঙেছে। বলা হয়েছে, এই তিন ধাক্কার জেরে সামগ্রিক ক্ষতির পরিমাণ ২০২২-২৩ সালে দেশের মোট জিডিপি ৪.৩ শতাংশের সমতুল। ২০১৫-১৬ থেকে ২০২২-২৩ সালের মধ্যে ইনফর্মাল সেক্টরের প্রায় ৬৩ লক্ষ সংস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দেশের গরিব সম্প্রদায়ের মানুষের। কারণ অসংগঠিত ক্ষেত্রের বিভিন্ন সংস্থার উপরই নির্ভরশীল দেশের অসংখ্য নিম্নবিত্ত মানুষের রুটিরুজি।
পাশাপাশি, রিপোর্টে বলা হয়েছে, অসংগঠিত ক্ষেত্রের একাংশ সংগঠিত ক্ষেত্রের আওতায় এসেছে। এর ফলে কর সংগ্রহ বেড়েছে। সরকারের কোষাগার ভরেছে। কিন্তু অসংগঠিত ক্ষেত্রে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির পথ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। পরিংখ্যান মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্য বলছে, ২০২১-২২ সালে কৃষি বহির্ভূত সংস্থার সংখ্যা ছিল ৫.৯৭ কোটি। ২০২২-২৩ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৬.৫ কোটি। স্বাভাবিকভাবেই এক বছরে এই সেক্টরে কর্মসংস্থান ৯.৭৯ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ১০.৯৬ কোটি। কিন্তু তা সত্ত্বেও পূর্ববর্তী পরিস্থিতির তুলনায় এই কর্মসংস্থানের সংখ্যা অনেকটাই কম। কারণ নোট বাতিল, জিএসটি ও লকডাউনের আগে ২০১৫-১৬ সালে এই ক্ষেত্রে ১১.১৩ কোটি চাকরি হয়েছিল। অর্থনীতিতে তিন ধাক্কা না এলে ২০২২-২৩ সালে এই সংখ্যাটাই বেড়ে দাঁড়াত ১২.৫৩ কোটি। মোদী জমানায় অসংগঠিত ক্ষেত্রের এই বেহাল পরিস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী দলগুলি। নিন্দায় সরব হয়েছে অন্যান্য মহলও।
![মোদীর তিন অদূরদর্শী সিদ্ধান্তের জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের অর্থনীতি! - প্রকাশ্যে ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চের রিপোর্ট](https://ekhonkhobor.com/wp-content/uploads/2024/07/WhatsApp-Image-2024-07-12-at-15.45.47-1.jpeg)